রাজধানীর সচিবালয় (Secretariat) এলাকায় মঙ্গলবার (২২ জুলাই) বিকেলে ভয়াবহ রূপ নেয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) (C. R. Abrar) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন একপর্যায়ে রূপ নেয় সহিংস সংঘর্ষে। এতে অন্তত ৮০ জন আহত হন, যাদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী ও একজন সাংবাদিক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (DMCH)-এর পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, “বিকেলে একজন সাংবাদিকসহ প্রায় ৮০ জন আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে আনা হয়। তারা লাঠিচার্জ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত হয়েছেন। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
জানা গেছে, আহতদের মধ্যে রয়েছেন—হাসান, সেরাতুল, সাকিব, তানভীর, রিফাত, সামিয়া, সামির, তামিম, ইমন, সিয়াম, রিজন, মেহেদী, মারুফ, মাহিন, রোহান, মুগ্ধ, জিদান, নিহার, রায়হান, রোমান, প্রান্ত, নাহিদ, ইমরান, নাঈম, স্বাধীন, তাসিন, আজহারুল, জিসান, পারভেজ, আসাদ, সাহিন, ফারদিন, শাহরিয়ার, রাইয়ান, সিনান, মামুন, ইয়াসিন আরাফাত শান্ত, তাসফি এবং হাবিব হাসান (Habib Hasan)—সাংবাদিক, মানবজমিন পত্রিকার প্রতিনিধি। আরও অনেকের পরিচয় তখনো নিশ্চিত হয়নি।
আন্দোলনের সূত্রপাত দুপুর থেকেই, যখন শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের পদত্যাগ দাবি করেন। বিকেল ৪টার দিকে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়—শিক্ষার্থীরা গেট ভেঙে সচিবালয়ের ভেতরে প্রবেশ করেন এবং একাধিক সরকারি গাড়িতে ভাঙচুর চালান।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়, ব্যবহার করা হয় কাঁদানে গ্যাসের শেলও। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে সচিবালয়ের বাইরে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট ও শিক্ষা ভবন চত্বরে। শিক্ষার্থীরা সেখানেও অবস্থান নেয়।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, তথ্য গোপন, মরদেহের হিসাব নিয়ে বিভ্রান্তি এবং সরকার পক্ষের ‘দায়িত্বহীন আচরণে’ তাদের ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সচিবালয় এলাকায় উত্তেজনা অব্যাহত ছিল। পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পরিণত হওয়া এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।