পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন না দিলে কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘেরাওয়ের হুমকি বিএনপি নেতার

বিএনপির শীর্ষ তিন নেতা—ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman), চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia), ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)—কে ঘেরাও করার হুমকি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা। ফতুল্লার সোনালি সংসদ মাঠে আয়োজিত দলীয় সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে দেওয়া এ বক্তব্য ঘিরে দলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার বিকেলের এই অনুষ্ঠানে খোকা ঘোষণা দেন, “শাহ আলমের জন্য নমিনেশন আনব, প্রয়োজনে আত্মাহুতি দেব কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে। তারেক রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ঘেরাও করব।” তার বক্তব্যে আরো উঠে আসে, ফতুল্লা নিয়ে ‘ষড়যন্ত্র’ হলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

শাহ আলম নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁকে ঘিরে নেতাকর্মীদের আবেগকে ইঙ্গিত করে খোকা বলেন, “ধানের শীষ ছাড়া ফতুল্লায় কিছু চলবে না। জনগণের প্রিয় নেতা শাহ আলমকে বাদ দিয়ে সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে বিশ্বাসঘাতকতা।” বক্তব্যের ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই মন্তব্য করেছেন, এতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিভাজন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জের ইঙ্গিত স্পষ্ট।

বক্তব্য ঘিরে স্থানীয় নেতাকর্মীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করলেও, অনেকে এটিকে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একপ্রকার প্রতিবাদ বলেই ব্যাখ্যা করেছেন। এমনকি বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষেও সমর্থন গড়ার ইঙ্গিতও ধরা পড়েছে।

এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ বলেন, “এটা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য না, একে পাগলের প্রলাপই বলা যায়। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখে নেতাকর্মীদের কথা বলা উচিত।” তিনি নেতাকর্মীদের সংযত থাকার আহ্বান জানান।

তবে বিতর্ক বাড়তে থাকায় নিজের বক্তব্যকে ‘স্লিপ অব টাং’ আখ্যা দিয়ে ক্ষমা চান লুৎফর রহমান খোকা। বলেন, “আসনটি যদি জোটের অন্য কাউকে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা ভোটারদের জন্য কষ্টদায়ক হবে। এটা বোঝাতে গিয়ে হয়তো বেশি বলে ফেলেছি। দলের প্রতি আমার আনুগত্য অটুট। আমি আমার বক্তব্যের জন্য দুঃখিত।”

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে শাহ আলম বিএনপির মনোনয়ন পেলেও আওয়ামী লীগের সারাহ বেগম কবরীর কাছে পরাজিত হন। ২০১৮ সালে এই আসন ছেড়ে দেওয়া হয় জোটসঙ্গী জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মনির হোসেন কাশেমীর কাছে, যিনি শেষ পর্যন্ত জয় পাননি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *