রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজের ভেতর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর এক ঘণ্টার বেশি সময় অজ্ঞাতেই পড়ে ছিলেন পাইলট তৌকির ইসলাম (Toukir Islam)। প্যারাস্যুট না খোলার কারণে বিধ্বস্ত হওয়ার সময়ই তিনি গুরুতর আহত হন এবং মূল দুর্ঘটনাস্থলের কাছেই টিনের চাল ভেদ করে পড়ে যান। তবে আগুন ও আতঙ্কের মধ্যে সবাই শিক্ষার্থীদের উদ্ধারেই ব্যস্ত থাকায় কেউ তখনো তাঁর খোঁজ পাননি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, ভয়াবহ এই দুর্ঘটনার পরও পাইলটের শরীরে তখনো প্রাণ ছিল। তাঁকে প্রথম দেখতে পান কলেজের জুনিয়র মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাহেদা। হায়দার আলী ভবনের উত্তর পাশে ঝাউগাছে ঝুলে থাকা একটি প্যারাস্যুট দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন জ্যেষ্ঠ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট মকবুল হোসেন (Mokbul Hossain)-কে।
মকবুল হোসেন দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখেন, পাইলট একটি টিনের চাল ভেদ করে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কক্ষে পড়েছেন এবং তখনো যুদ্ধবিমানের ইজেকশন সিটের সঙ্গেই আটকে আছেন। তিনি বলেন, ‘পাইলট তখন অচেতন অবস্থায় সিটে কাত হয়ে পড়ে ছিলেন। তাঁকে আমরা সেই অবস্থায়ই উদ্ধার করি।’
এরপর সেনাসদস্যরা এসে তৌকির ইসলামকে সিট থেকে বের করে কলেজের মেডিকেল রুমে নিয়ে যান। সেখানেই মকবুল হোসেন তাঁর প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করেন। মকবুল জানান, ‘তাঁর পাল্স পাচ্ছিলাম, রক্তচাপ ছিল ১০০-৬০। মুখে কিছুটা রক্ত থাকলেও শরীরের বাইরে বড় কোনো আঘাত দেখা যায়নি।’ এর মানে, পাইলট তখনো জীবিত ছিলেন এবং দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছিল।
তবে সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গুরুতর আহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে শেষ পর্যন্ত বাঁচানো সম্ভব হয়নি।