“জুলাই সনদ” ও “জুলাই ঘোষণাপত্র” এক নয়—এই বিষয়ে চলমান বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন আখতার হোসেন (Akhtar Hossain), জাতীয় নাগরিক পার্টি (Jatiya Nagorik Party, NCP)-এর সদস্যসচিব। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি স্পষ্ট জানান, দুই দলিলের ভিন্নতা না বুঝে একসঙ্গে মিশিয়ে ফেলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার অংশ হতে পারে, যা এনসিপির অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
আখতার হোসেন ব্যাখ্যা করে বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্র” হলো ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের বিজয় এবং পূর্ববর্তী গণ–অভ্যুত্থানের একটি ঐতিহাসিক স্বীকৃতি—যার আইনি ভিত্তি থাকা জরুরি। এটি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল। অপরদিকে, “জুলাই সনদ” মূলত রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে একটি রূপরেখা, যা কমিশনের আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর প্রস্তাবনাকে ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা চাই না জুলাই সনদ আবার অতীতের মতো একটা অর্থহীন দলিল হয়ে যাক। আমরা চাই এটি হবে কার্যকর, সংস্কারভিত্তিক, আইনি ভিত্তিসম্পন্ন এবং তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নযোগ্য।”
এই সময় তিনি আরো বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ না করলে এনসিপি তা প্রকাশ করবে।
জুলাই সনদের প্রাথমিক খসড়া নিয়ে এনসিপির স্পষ্ট আপত্তি রয়েছে বলেও জানান আখতার হোসেন। তার ভাষায়, “কমিশনের খসড়ায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের দুই বছরের মধ্যে সনদের সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। আমরা মনে করি, এটি জনগণকে প্রতারণার সুযোগ করে দেয়। বিলম্বিত বাস্তবায়নের এই রূপরেখা জনগণের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি আহ্বান জানান, সংবাদ পরিবেশনের সময় যেন স্পষ্ট করে বলা হয়, “জুলাই সনদ” ও “জুলাই ঘোষণাপত্র” এক নয়। আখতার হোসেন বলেন, “অনেকে ভাবছেন, আমরা যদি জুলাই সনদে সই করি, তাহলে সব মেনে নিচ্ছি। এটা সম্পূর্ণ ভুল। আমাদের অবস্থান খুবই পরিষ্কার—আইনি ভিত্তি ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া আমরা কোনো সনদে স্বাক্ষর করব না।”
আখতার হোসেনের মতে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথ সুগম করতে হলে কাগুজে প্রতিশ্রুতির বাইরে গিয়ে বাস্তবভিত্তিক ও জনগণের প্রত্যাশাপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।