গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান (Muhammad Rashed Khan) সরাসরি মন্তব্য করেছেন, “ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)–এর ওপর বিশ্বাস করে আমরা ভুল করেছি।” অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “এই সরকারের সফলতা একশোর মধ্যে দশ।”
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে অনুষ্ঠিত “ডেমোক্রেসি ডায়াস” শীর্ষক সেমিনারে এসব মন্তব্য করেন তিনি। সেখানে সরকারের কর্মদক্ষতা ও নীতিগত স্পষ্টতার ঘাটতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা এখনো জানি না এই সরকারের গন্তব্য কোথায়। পরিকল্পনা কী—তা আমাদের অজানা। এমন এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আমরা রয়েছি।”
রাশেদ খান জানান, গত এক বছরে ড. ইউনূসের ওপর তারা পূর্ণ আস্থা রেখেছিলেন, সমালোচনা থেকেও বিরত ছিলেন—এ বিশ্বাসেই যে তাঁর নেতৃত্বেই দেশে একটি নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে। কিন্তু সেই বিশ্বাসের পরিণামে আজ তাঁরা গভীর হতাশ। তিনি বলেন, “এক বছর ধরে তাঁকে আমরা ব্ল্যাংক চেক দিয়েছি। কিন্তু সেই চেকের বিনিময়ে যা অর্জিত হয়েছে, তা একশোর মধ্যে মাত্র দশ।”
তিনি আরও বলেন, “এক মাস আগেও আমরা তাঁর সমালোচনা করিনি। কারণ আশঙ্কা ছিল, তাঁর পদত্যাগ হলে দেশে নির্বাচন, সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে। কিন্তু আজ বাস্তবতা হলো, তিনি নিজেই এখনো নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর করতে পারেননি।”
সরকারের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়েও ক্ষোভ ঝেড়েছেন রাশেদ খান। তিনি অভিযোগ করেন, “যারা সরকারের সুবিধাভোগী, তারা মনে করছে সরকার যতদিন থাকবে ততদিন তারা নিজেদের সুবিধা আদায় করতে পারবে। সেই সুবিধা আদায়ের লোভে তারা সরকারকে আনলিমিটেড সময় দিয়ে দিয়েছে।”
এ সময় সরকারের পক্ষাবলম্বনকারীদের কড়া সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন, “এখন কেউ প্রশ্ন তুললেই তাকে বলা হয় দালাল, কিংবা ‘জুলাই গাদ্দার’। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আজ ন্যূনতম নেই।”
ড. ইউনূসের নীরবতা ও সরকারের অস্পষ্টতা নিয়ে রাশেদ খানের এই বক্তব্য এখন রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা জোরদার করেছে। বিশেষ করে এমন এক সময়, যখন দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঘোলাটে—তখন এই ধরনের প্রকাশ্য হতাশা জনমনে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে: নেতৃত্বে আস্থা রাখার জায়গাটা কোথায়?