শেখ হাসিনার রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে বামপন্থিদের ‘বর্ণচোরা ষড়যন্ত্র’—অভিযোগ ঢাবি শিবির সভাপতির

বামপন্থিদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ‘বর্ণচোরা ষড়যন্ত্রে’ লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ এনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির (Dhaka University Islami Chhatra Shibir) সভাপতি এস এম ফরহাদ। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে টিএসসিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, বাম সংগঠনগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মব তৈরি করে বিচারিক হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ বলেন, “শেখ হাসিনার রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে বামরা বর্ণচোরা ষড়যন্ত্রে নেমেছে। মতিউর রহমান নিজামীসহ জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের ফাঁসির আদেশ ছিল একটি পরিকল্পিত বিচারিক হত্যাকাণ্ড। এর দায় শুধু শেখ হাসিনার নয়, শাহবাগের ফ্যাসিবাদীদের সহযোগীদেরও রয়েছে। যারা ১০-১২টি সংগঠন থেকে ২০-২৫ জন এনে টিএসসিতে জড়ো হয়েছে, তারাই এই ষড়যন্ত্রের অংশ।”

এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ৩৬ জুলাই বিপ্লবের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘আমরাই ৩৬ জুলাই: আমরা থামব না’ শিরোনামে তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনেই ‘বিচারিক হত্যার শিকার’ দাবি করে প্রদর্শিত হয় জামায়াত ও বিএনপির একাধিক নেতার ছবি। এই তালিকায় ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী (Motiur Rahman Nizami), গোলাম আজম (Ghulam Azam), দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, কামরুজ্জামান চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী (Salahuddin Quader Chowdhury)।

তবে ওই ছবি প্রদর্শনী নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বামপন্থি সংগঠনগুলো। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছবিগুলো সরিয়ে নেয়। এ ঘটনার পর থেকেই সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত টিএসসি চত্বরে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভে নামে ছাত্রশিবির ও বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা।

শাহবাগ-ঘেঁষা রাজনীতি নিয়ে এমন বক্তব্য ছাত্রশিবিরের তরফে নতুন কিছু নয়। তবে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের দাবি তুলে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্তদের নিয়ে প্রকাশ্য ছবি প্রদর্শন, এবং এরপর তা ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি—এই পুরো প্রেক্ষাপট আবারও তুলে ধরেছে দেশের রাজনীতিতে ইতিহাস, বিচার ও মতাদর্শিক সংঘাতের গভীর বিভাজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *