হবিগঞ্জ আদালতের হাজতখানায় সন্তানকে কোলে নেওয়া অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর তা ঘিরে শুরু হয় আলোচনার ঝড়। এরই জেরে দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ সদস্যকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার।
ঘটনাটি ঘটে হবিগঞ্জ (Habiganj) জেলা আদালতে। ভাইরাল হওয়া ছবিটিতে দেখা যায়, হাজতখানায় আটক থাকা ছাত্রলীগের এক নেতা কোলে নিচ্ছেন তার নবজাতক সন্তানকে। এই মানবিক মুহূর্তটি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে, যা দ্রুতই দৃষ্টি কাড়ে প্রশাসনের।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন (Zakir Hossain) হাজিরা দিতে সোমবার আদালতে হাজির হন। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেসময় তার স্ত্রী সদ্যজাত সন্তানকে নিয়ে হাজির হন আদালত চত্বরে। সন্তানের মুখ দেখতে ব্যাকুল জাকির হোসেন পুলিশের কাছে বারবার আকুতি জানান—একবার যেন সন্তানকে কোলে নিতে পারেন। অবশেষে পুলিশ অনুমতি দিলে তিনি কোলে তুলে নেন নিজের শিশুকে।
এই মানবিক দৃশ্যের ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। জনমনে সহানুভূতির সঞ্চার হলেও পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টিতে এটি ছিল দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এলে হবিগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এএসআই সবুজ চন্দ ও কনস্টেবল উজ্জ্বল মিয়াকে “ক্লোজড” করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শেখ নাজমুল হক (Sheikh Nazmul Haque)। তিনি জানান, শিশুকে কোলে নেওয়ার ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পরপরই বিষয়টি আলোচনায় আসে এবং পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান (ANM Sajedur Rahman) বুধবার সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি হবিগঞ্জ শহরের কোর্ট জামে মসজিদের সামনে থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জাকির হোসেনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। সেই থেকেই তিনি কারাগারে আছেন এবং এখনো মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।