জনগণের ইচ্ছায় দায়িত্ব নিয়েছি, নিজের ইচ্ছায় নয়: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি নিজের ইচ্ছায় নয়, দেশের জনগণের ইচ্ছায় সরকারপ্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তার ভাষায়, পরিবর্তনের দাবি ব্যক্তিগতভাবে তার পক্ষ থেকে আসেনি, বরং জনগণের পক্ষ থেকেই এসেছে, আর তিনি কেবল সেই নির্বাচিত পথ ধরে পথপ্রদর্শন করছেন।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে ১১-১৩ আগস্ট তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যান প্রধান উপদেষ্টা। সফর চলাকালে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বারনামাকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নেন বারনামার প্রধান সম্পাদক আরুল রাজু দুরার রাজ, সঙ্গে ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল নিউজ সার্ভিসের সম্পাদক ভুন মিয়াও পিং এবং বারনামার ইকোনমিক নিউজ সার্ভিসের সহকারী সম্পাদক কিশো কুমারী সুশেদারাম।

ইউনূস বলেন, “এখানে অনেক অসুবিধা রয়েছে, অনেকেই এটিকে ব্যাহত করতে চায়। বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত রাজনৈতিক উপাদানগুলো পুরো ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।” তিনি উল্লেখ করেন, গত দেড় দশকে যেসব তরুণ ভোটার হয়েছেন, তাদের কেউই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি। “কেউ ১০ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন, কেউ ১৫ বছর ধরে। ভাবুন, আপনার বয়স ১৮ হলো, আপনি ভোট দিতে আগ্রহী, কিন্তু সেই সুযোগ কখনোই এল না—কারণ প্রকৃত অর্থে কোনো নির্বাচনই হয়নি। এখন তারা প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন।”

নিজের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি জনগণের ওপর নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন না। “আমি অপেক্ষা করি এবং মানুষের ইচ্ছা কী, তা দেখি। তারপর সেই ইচ্ছাই বাস্তবায়ন করি।”

এছাড়া দীর্ঘদিনের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। বিশেষ করে আসিয়ানের সভাপতি দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ার প্রভাব কাজে লাগানোর আহ্বান জানান। ড. ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গা আশ্রয় প্রদানে মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা ও আঞ্চলিক নেতৃত্ব এই সমস্যার সমাধানে দেশটিকে অনন্য অবস্থানে নিয়ে এসেছে। তার প্রত্যাশা, “মালয়েশিয়া তার প্রভাব ব্যবহার করে আলোচনার অগ্রগতি নিশ্চিত করবে, যাতে আমরা রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান করতে পারি।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *