বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির (Bangladesh Islami Chhatra Shibir) সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমানের বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে। তিনি ‘জুলাই আন্দোলনকারীদের’ ‘কালো শক্তি’ বলে আখ্যায়িত করায় ছাত্রশিবির ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন—এই মন্তব্য শুধু ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা নয়, বরং স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা।
শনিবার (২৪ আগস্ট) ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার রক্তঝরা বিপ্লব। এই আন্দোলনে সহস্রাধিক মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। সেই ঐতিহাসিক সংগ্রামকে ‘কালো শক্তি’ বলে আখ্যায়িত করা কেবল অজ্ঞতা নয়, বরং স্পষ্টভাবে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ন্যক্কারজনক প্রয়াস।”
বিবৃতিতে নেতারা অভিযোগ করেন, “ফজলুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী ঘরানার বয়ান প্রচার করে আসছেন। কখনও তিনি অভ্যুত্থানকে ‘অপশক্তির ষড়যন্ত্র’ বলে চিত্রিত করছেন, কখনও আবার এর নেতৃত্বকে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে হেয় করছেন। শুধু তাই নয়, তিনি আওয়ামী মুজিববাদ পুনরায় প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং মুক্তিযুদ্ধকে জুলাই অভ্যুত্থানের বিপরীতে দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে—এই ব্যক্তি বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের উপদেষ্টা হওয়া সত্ত্বেও দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
শিবির নেতারা আরও বলেন, “ফজলুর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্টভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বয়ান প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। তিনি শুধু জুলাই যোদ্ধাদের অবমাননা করছেন না, বরং অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে ফাটল ধরিয়ে সেই আন্দোলনের ভিত্তিকেই দুর্বল করার চেষ্টা করছেন। এটা জুলাই গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার এক ধরনের অপচেষ্টা।”
তারা জোর দিয়ে বলেন, “বর্তমানে যে সরকার শহীদদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত, সেই সরকারকেও দেখা যাচ্ছে কটূক্তিকারীদের প্রশ্রয় দিতে। এতে শহীদদের আত্মত্যাগকেই অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই—ফজলুর রহমানের মতো ব্যক্তিদের বক্তব্য অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।”
বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, “দলীয়ভাবে ফজলুর রহমানের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করুন এবং সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিন। তা না হলে জুলাই অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা জনগণ, ছাত্র ও সংগ্রামী শক্তিরা এর উপযুক্ত জবাব দিতে বাধ্য হবে।”