বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (Bangladesh Shipping Corporation)—সংক্ষেপে বিএসসি—৫৪ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিজস্ব অর্থায়নে চীন থেকে দুটি আধুনিক বাল্ক ক্যারিয়ার কার্গো জাহাজ কিনছে। প্রতিটি জাহাজের ধারণক্ষমতা ৫৫ থেকে ৬৬ হাজার টন।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি গত ১২ আগস্ট এ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম জাহাজ চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে আর দ্বিতীয়টি নভেম্বরে বিএসসির বহরে যুক্ত হওয়ার কথা। বাংলাদেশি মুদ্রায় দুটি জাহাজের মোট দাম দাঁড়িয়েছে ৯৩৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
নতুন এই জাহাজ দুটির মাধ্যমে বছরে আনুমানিক ১৫০ থেকে ২০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছে সংস্থাটি। পাশাপাশি দেশীয় নাবিকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, একই সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা আয়েরও নতুন সুযোগ তৈরি হবে। মঙ্গলবার দুপুরে বিএসসির প্রধান কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, একসময় পতাকাবাহী সর্বাধিক জাহাজের মালিক ছিল বিএসসি। নব্বইয়ের দশকে সংস্থার বহরে ছিল ৩৪টি জাহাজ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুর্ঘটনার কারণে সেই বহর ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়।
২০১৮ সাল থেকে নতুন জাহাজ যুক্ত হওয়ায় সংস্থাটি আবার লাভজনক অবস্থায় ফিরে আসে। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং অগ্নিকাণ্ডের কারণে কয়েকটি জাহাজ হারিয়ে বর্তমানে বিএসসির বহর নেমে এসেছে মাত্র পাঁচটিতে।
বর্তমানে করপোরেশনের বহরে রয়েছে—এমভি বাংলার জয়যাত্রা, এমভি বাংলার অর্জন, এমটি বাংলার অগ্রগতি, এমটি বাংলার অগ্রযাত্রা এবং এমটি বাংলার অগ্রদূত। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিএসসি সর্বোচ্চ ২৪৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা মুনাফা করেছে, যা এ সংস্থার জন্য একটি রেকর্ড।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর মাহমুদুল মালেক, নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্য) মুহাম্মাদ আনোয়ার পাশা, নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইউসুফ, সচিব আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম এবং মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) সাজিয়া পারভীনসহ অন্য কর্মকর্তারা।