গ্রেপ্তার ভিপি প্রার্থী জালালকে নিয়ে রাশেদ খানের আবেগঘন পোস্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদপ্রার্থী জালাল আহমদ (Jalal Ahmed) রুমমেটকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিষয়টি ঘিরে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছেন রাশেদ খান (Rashed Khan), যিনি বর্তমানে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক।

বুধবার (২৭ আগস্ট) নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে রাশেদ খান লেখেন, “২০১৮ সালে আমরা গ্রেপ্তার হলে জালাল নতুন করে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখে। আমাদের মুক্তির জন্য আমার মাকে সঙ্গে নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী (Zafrullah Chowdhury), ড. কামাল হোসেন ও ব্যারিস্টার মঈনূল হোসেনের কাছে যায়। তাদের সহযোগিতায় আমরা জামিন পেয়ে আবারো রাজপথে নেমে আন্দোলন সফল করি।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আখতার হোসেন গ্রেপ্তার হলে জালাল আবারও সক্রিয়ভাবে পাশে ছিলেন। নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদরা পুলিশের হেফাজতে থাকা অবস্থায় জালাল ঝুঁকি নিয়ে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান করেছেন—এসব তথ্য আখতার হোসেনের সহধর্মিণী সানজিদা আখতার নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

ফেসবুক পোস্টে রাশেদ খান প্রশ্ন তোলেন, “মহসীন হলের ঘটনা কি শুধুই দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব? তদন্ত ছাড়া কি জালালের ভিপি প্রার্থিতা বাতিল করা যায়? গতকাল (২৬ আগস্ট) কেন পুলিশের উপস্থিতিতেই তার ওপর মব সৃষ্টি করা হলো? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাইলে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে পারত, কিন্তু যেভাবে মব লিঞ্চিংয়ের মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে, তা একেবারেই নিন্দনীয়।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি লেখেন, “জালালের সংগ্রাম সম্পর্কে জানুন, অভিযোগের যথাযথ তদন্ত করুন। যদি দোষী প্রমাণিত হয় তবে শাস্তি দিন, তবে তার ছাত্রত্ব বাতিল করা ঠিক হবে না। খোঁজ নিলে দেখা যাবে, সে একসময় গুমের শিকার হয়েছিল এবং জিহ্বায় ইলেকট্রনিক শকের কারণে এখনো মানসিক ট্রমায় ভুগছে।”

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে মুহসীন হলের ৪৬২ নম্বর কক্ষে ঘুমিয়ে থাকা শিক্ষার্থী রবিউলের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন জালাল। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি রবিউলের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করেন এবং এতে রবিউল গুরুতর আহত হন। আশপাশের শিক্ষার্থীরা চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করেন। রবিউল বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন।

ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করে। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জালাল আহমদকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *