জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল (Masud Kamal) ড. ইউনূসকে ঘিরে কঠোর সমালোচনা করেছেন। তার মতে, ড. ইউনূস (Dr. Yunus) বাংলাদেশের মানুষকে বোঝেন না, দেশের বাস্তব জীবন থেকে তিনি দূরে অবস্থান করেন।
সম্প্রতি একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাসুদ কামাল বলেন, “আমি মাঝে মাঝে অভিমান করে বলি—ড. ইউনূস বাংলাদেশকে চেনেন না। তিনি এ দেশের মানুষকে বোঝেন না। এ দেশের মানুষ কী চায়, কীভাবে বাঁচে—সে বিষয়ে তার কোনো ধারণাই নেই।”
তিনি উল্লেখ করেন, ইউনূস নিজের কিছু মিশন নিয়ে এসেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা ছিল, সেখান থেকে রেহাই পাওয়ারও উদ্দেশ্য ছিল। তিনি জীবনের বড় সময় কাটিয়েছেন বিদেশে। তাই মানুষের মাটির বাস্তবতা তার কাছে অচেনাই রয়ে গেছে।
সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ইউনূস প্রথমে বলেছিলেন—“মন খুলে সমালোচনা করবেন।” এ বক্তব্যে প্রথমে আশাবাদী হয়েছিলেন মাসুদ কামাল। তিনি ভেবেছিলেন, সমালোচনার মাধ্যমে ভুল শুধরে নেয়ার সুযোগ তৈরি হবে। কিন্তু এক বছরের অভিজ্ঞতা ভিন্ন বাস্তবতা তুলে ধরেছে। তার ভাষায়, “উনি একটাই কথা উচ্চারণ করেছেন—মন খুলে সমালোচনা করবেন। কিন্তু দ্বিতীয় অংশটা বলেননি—আমি কিছুই শুনব না। আর সেটাই উনি বাস্তবে পালন করছেন।”
সমাজ ও রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে মাসুদ কামাল বলেন, “আমরা সবাই খাঁচার মধ্যে আছি। একে অপরকে দেখি, ঘেউঘেউ করি, কিন্তু খাঁচা কেউ ভাঙতে পারে না। যতদিন খাঁচা না ভাঙবেন, ততদিন কোনো পরিবর্তন সম্ভব নয়। নিজেদের দাবিগুলো নিজেদেরই আদায় করতে হবে, অন্য কেউ করে দেবে না।”
তিনি আরও যোগ করেন, “যারা বৈষম্য নিয়ে কথা বলেছিল তারাই এখন বৈষম্য করছে। যারা কোটা সংস্কারের আন্দোলন করেছিল, তারাই এখন কোটার সুবিধা নিচ্ছে। তাহলে আসল লাভটা হলো কী? আমরা আন্দোলন করি, ঘাম ঝরাই, রক্ত দিই, আর শেষে দেখি—অর্জনটা অন্যের পকেটে চলে যায়। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।”
তার অভিযোগ, এখন ব্যস্ততা চলছে—কাকে নিষিদ্ধ করা যায়, কাকে ধরা যায়, কে কোন সনদ নিয়েছে, কে কার হয়ে কাজ করছে—এসব নিয়েই। অথচ মানুষের প্রকৃত সমস্যাগুলো থেকে দৃষ্টি সরে যাচ্ছে।