আদালতে ক্ষোভ ঝাড়লেন রিয়াদ: ‘কুত্তার মতো পেটায়, এজন্য কি যুদ্ধ করেছিলাম?’

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ (Abul Kalam Azad)-এর কাছে ৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ (Abdur Razzak Riad)সহ চার আসামির চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (২৭ আগস্ট) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হক এই আদেশ দেন।

রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসামি রিয়াদ তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা যদি সত্যিই অপরাধ করে থাকি, বাদীদের আমার সামনে হাজির করা হোক। সে যেন সরাসরি বলে যে আমি তার কাছে টাকা চেয়েছি। আন্দোলনের পর আমার পরিবার কি আর ঘরবাড়ি করতে পারে না? আমাদের কুত্তার মতো পেটানো হয়, মাটিতে ফেলে রাখা হয়। এই দেশের জন্য যুদ্ধ করা কি আমাদের অপরাধ হয়ে গেল? আদালতে একের পর এক আইনজীবী এসে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে। আমাদের ক্রমাগত মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে হয়রানির জন্য।”

এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার ইন্সপেক্টর নাজমুল জান্নাত শাহ রিয়াদসহ চারজনকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মুহাম্মদ শামছুদ্দোহা সুমন রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি দেন। অপরদিকে রিয়াদের পক্ষে আইনজীবী আক্তার হোসেন ভূঁইয়া এবং ইব্রাহিম হোসেনের পক্ষে আব্দুল্লাহ আল ফারুক জামিন আবেদন করে রিমান্ড বাতিলের প্রার্থনা করেন। তবে অপর দুই আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। শুনানি শেষে আদালত চার আসামির চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুনানি শেষে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর শামছুদ্দোহা সুমন গণমাধ্যমকে বলেন, “গত ৫ আগস্টের পর থেকে দেশে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে চাঁদাবাজ শ্রেণির উত্থান হয়েছে। আইনের কাছে সবাই সমান। যেমন আনিসুল হক-পলকরা আইনের আওতায় এসেছে, তেমনি চাঁদাবাজদেরও বিচার হবে।”

এর আগে গুলশানে সাবেক এমপির বাসায় গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির আরেক মামলায় রিয়াদসহ বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন।

উল্লেখ্য, আবুল কালাম আজাদের শ্যালক সাইফুল ইসলাম গত ১ আগস্ট তেজগাঁও থানায় ৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজির এ মামলাটি করেন। মামলার বিবরণে বলা হয়, আবুল কালাম আজাদের একটি গার্মেন্টস কারখানা রয়েছে। গত ২৬ জুন বিকেলে রিয়াদসহ অপর আসামিরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক পরিচয়ে ওই কারখানার অফিসে গিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫ কোটি টাকা দাবি করে।

আজাদ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে ‘শেখ হাসিনার দোসর’ আখ্যা দিয়ে সেনাবাহিনী দিয়ে গ্রেপ্তার করানো এবং গণমব সৃষ্টি করে রাস্তায় বেইজ্জতির ভয় দেখানো হয়। পরে তারা অফিসের ড্রয়ার খুলে ১১টি চেক বের করে আজাদের স্বাক্ষর করায়। এরপর রিয়াদ ফোন করে হুমকি দেয়, নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে হবে, নইলে পুলিশ দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেওয়া হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *