পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র দেখার পর নিজেদের পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করে ভবিষ্যতের সরকারপ্রধানদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব তুলেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী (Mostofa Sarwar Farooki)। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি ‘থার্টি সিক্স আওয়ার্স অব বিট্রেয়াল’ প্রামাণ্যচিত্র নিয়ে নিজের অনুভূতি ও বিশ্লেষণ তুলে ধরেন।
ফারুকী লেখেন, “গাড়িতে বসে প্রামাণ্যচিত্রটা আবার দেখছিলাম। শুরুর দিকে জেনারেল শাকিলের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথন শুনে গা হিম হয়ে যায়। এর চেয়ে বড় কোনো বেঈমানি আমার জানা নাই।” তিনি আরো বলেন, “র্যাব পাঠাচ্ছি, হেলিকপ্টার পাঠাচ্ছি বলে কাউকে তো পাঠালোই না, বরং ৫৭ জন অফিসারকে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল।”
এই ঘটনায় তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই বেঈমানির পেছনে কি সেনাবাহিনীর প্রতি তার প্যাথলোজিক্যাল হেইট্রেড কাজ করেছে?” এরপরই ফারুকী মন্তব্য করেন, “এসব দেখে আমার মনে হয়, ভবিষ্যতে হেড অব দ্য গভর্নমেন্ট যিনিই হবেন, তার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত।”
এর আগে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘থার্টি সিক্স আওয়ার্স অব বিট্রেয়াল’ প্রকাশ করা হয়। প্রেস উইংয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ফ্যাসিবাদী শাসন, পিলখানা ট্র্যাজেডি ও ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নিয়ে নির্মিত হচ্ছে একাধিক ডকুমেন্টারি সিরিজ।
বিবৃতিতে বলা হয়, “২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ড জাতির ইতিহাসে এক সন্ধিক্ষণ, যেখান থেকে উত্থান ঘটে ফ্যাসিবাদের, যেখান থেকে শুরু হয় দীর্ঘ ১৬ বছরের পরাধীনতার অধ্যায়।”
প্রামাণ্যচিত্রটির নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ক্ষোভ, হতাশা ও বিশ্বাসঘাতকতার প্রতিধ্বনি—‘থার্টি সিক্স আওয়ার্স অব বিট্রেয়াল’। ফারুকীর মতো বিশিষ্টজনেরা যখন প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধানের মানসিক অবস্থান নিয়ে, তখন প্রামাণ্যচিত্রটি নিছক একটি ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনার চেয়ে অনেক বেশি—এটি যেন ইতিহাস পুনরালোচনার এক সাহসী প্রচেষ্টা।