অনুমতি ছাড়া নারী শিক্ষার্থীর ছবি তুলে বিতর্কে ডাকসুর শিবিরের প্রার্থী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে ক্রীড়া সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরমান হোসেন (Arman Hossain)। সম্প্রতি অনুমতি ছাড়া এক নারী শিক্ষার্থীর ছবি তোলার ঘটনায় তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের আয়োজিত প্রার্থীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি এক অনুষ্ঠানে ঘটনাটি সামনে আসে। সেখানে উপস্থিত এক নারী শিক্ষার্থী সরাসরি আরমানকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে নারীদের নিরাপত্তার কথা বলা হলেও তিনি নিজেই নারী শিক্ষার্থীর ছবি অনুমতি ছাড়া তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। শিক্ষার্থীর অভিযোগ অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমে তিনি এমন কাজ করেছিলেন এবং এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি যুক্তি দেখান, পাবলিক প্লেসে ছবি তোলা যায়।

আরমান অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঘটনাটি ঘটেছিল ছেলেদের জিমের সময়, যেখানে একজন নারী টেবিলে পা তুলে মোবাইলে কথা বলছিলেন। তিনি দাবি করেন, মুখ না দেখা যায় এমনভাবে ছবি তুলে সেটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের আচরণ আর কেউ না করে। তিনি আরও বলেন, “আমি ঢাকা ইউনিভার্সিটি জিম স্কোয়াড গ্রুপের মডারেটর হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকেই পোস্ট দিয়েছি। ওই ছবিতে কারো মুখ বোঝা যায়নি।”

তবে ওই নারী শিক্ষার্থী পাল্টা জবাবে বলেন, ছবি তোলার আগে অন্তত অনুমতি নেওয়া যেত বা সরাসরি এসে ভুল ধরিয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু ছবি তুলে তা প্রকাশ করা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি অভিযোগ করেন, আরমান হেনস্থার বিষয়টিকে স্বীকারই করতে চাননি।

এর জবাবে আরমান দাবি করেন, বিষয়টি ছিল “দৃষ্টিকটূ” এবং তিনি ছবি তোলার মাধ্যমে একটি ভুল কাজের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চেয়েছেন। কিন্তু উপস্থিত অন্যান্য প্রার্থীরাও তার যুক্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। এক প্রার্থী বলেন, “আপনার ছোটবোন হলে আপনি তাকে সরাসরি বলতেন। ছবি তুলে গ্রুপে পোস্ট করাটা কেন দরকার হলো?” আরেকজন প্রার্থী যোগ করেন, “কাছে গিয়ে বলা যাবে না, কিন্তু ছবি তুলে পোস্ট করা যাবে—এ কেমন যুক্তি?”

এমন বিতর্কের মুখে আরমান শেষ পর্যন্ত স্পষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে জুডো ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেছেন আরমান। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, নির্বাচিত হলে নারীদের হলে প্রতি বছর সেলফ-ডিফেন্স প্রশিক্ষণের আয়োজন করবেন। পাশাপাশি শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের বৈষম্য নিরসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠ সংস্কার, ক্রীড়া পঞ্জিকা তৈরি, জিমনেশিয়াম আধুনিকায়ন, প্রতিটি হলে মিনি জিম চালু, অনলাইন ফি প্রদানের ব্যবস্থা, ইনডোর গেমস সেন্টারে স্মার্ট কার্ড পাঞ্চ সিস্টেম ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনের মতো একাধিক পদক্ষেপ নেবেন। এছাড়া কোটা ভিত্তিক খেলোয়াড়দের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ নীতি প্রণয়ন এবং আন্তঃহল ও আন্তঃবিভাগীয় প্রতিযোগিতার বাজেট বৃদ্ধিরও অঙ্গীকার করেছেন তিনি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *