রাজধানীর ফুটপাতে শুরু করা ছোট্ট এক ভাতের হোটেল থেকেই আলোচনায় আসেন মিজান। একসময় রিকশা ও সিএনজিচালকদের ভরসার জায়গা ছিল তার দোকান। নাম দেন ‘গরীবের বুফে’। কর্মচারীবিহীন এই দোকানে ক্রেতারা নিজেরাই খাবার নিয়ে খেতেন, আর সুলভ মূল্যে ভাত-মাংসের আয়োজনের কারণে মুহূর্তেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে জায়গাটি। কিন্তু হঠাৎ কয়েকজন ইউটিউবারের কনটেন্টে ভাইরাল হওয়ার পর থেকে যেন বদলে যায় সবকিছু।
সম্প্রতি মিজানের হোটেলে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গভীর রাতে তাকে খুঁজে না পেয়ে দোকান ভাঙচুর করেছে তারা। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ‘গরীবের বুফে’খ্যাত মিজান।
অশ্রুসিক্ত চোখে মিজান জানান, এখন তাকে মাগরিবের আগেই দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে আসতে হয়। তিনি বলেন, “যখন রাতে দোকান ভাঙচুর হলো, আমি সেখানে থাকলে আমার অবস্থা আরও খারাপ হতো। কে কখন এসে হুন্ডায় করে আমাকে মেরে রেখে যাবে, আমি নিজেও জানি না। কিছু হলে কেউ জানতেও পারবে না।”
শুধু তাই নয়, তার হোটেলে খেতে আসা এক ক্রেতার সঙ্গে চাঁদাবাজদের সংঘর্ষও হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেন, “ওরা এসে গ্লাস ভেঙেছে, কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। বলেছে, ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে, না হলে দোকান চালাতে দেওয়া হবে না। আমি বললাম, এটা তার (মিজান) ব্যাপার। তখন সে আমার কলার ধরে টান দেয়। আমি-ও তাকে ধরে ফেলি। এভাবে হাতাহাতি করতে করতে আমরা রাস্তায় চলে যাই। পরে গাড়িচালকরা থামিয়ে সবাই সেই চাঁদাবাজকে ধমক দেয়।”
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, এখন আর খাবারের স্বাদ আগের মতো নেই। কেউ বলছেন, গরুর মাংসে লবণ কম, কেউ বলছেন মসলার স্বাদ নেই। ভাতও সঠিকভাবে সিদ্ধ হয় না। অনেকেই এসে খেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। তবে কিছু ক্রেতা মনে করছেন, মিজান যে চাপের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে রান্না ও পরিবেশন ঠিক রাখা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মিজানের জন্য নিরাপদে ব্যবসা করার পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।