জরিপে শিবিরের সাদিক ৪১ শতাংশ, ছাত্রদলের আবিদ ১৩ শতাংশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কার কেমন জনপ্রিয়তা রয়েছে তা নিয়ে জরিপ চালিয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যারেটিভ। এতে কার কত শতাংশ জনপ্রিয়তা রয়েছে তা তুলে ধরা হয়েছে। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির জরিপের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৩০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলা সার্ভেতে মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ডাকসু নির্বাচন ও শীর্ষ তিনটি পদ নিয়ে কী ভাবছেন তা জানতে চাওয়া হয়। এই অল্প কয়েক দিনের মধ্যে সর্বমোট ১৪টি হল (৪টি মেয়েদের ও ১০টি ছেলেদের হল) থেকে ৫২০টি স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যেক হল থেকে ৪০টি করে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করা হলেও গড়ে ৩৮টির মতো তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। স্যাম্পলিং ছিল স্ট্রাটিফাইড র‌্যান্ডম এবং সরাসরি হলগুলোতে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যাতে সিলেকশন বায়াস না থাকে।

ডেটা বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে পেশাদার সহায়তা নেওয়া হয়। এতে দেখা হয়, মোট ভোটারদের মধ্যে কারা ভোট দেবেন বলে মনস্থির করেছেন। এরপর প্রতিটি পদের (সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সাধারণ সম্পাদক) জন্য নির্দিষ্ট প্রার্থীকে ভোট দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের আলাদা করে চিহ্নিত করা হয়। এদের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া পাঁচজন প্রার্থীকে তালিকাভুক্ত করা হয়। বাকি প্রার্থীদের ‘অন্যান্য’ নামে একটি গ্রুপে রাখা হয়। পরে শীর্ষ পাঁচজন ও ‘অন্যান্য’ গ্রুপের প্রাপ্ত ভোট শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়।

এছাড়া, জেন্ডার, হল, বিভাগ এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী বিশ্লেষণ করতে প্রতিটি শ্রেণি (যেমন: পুরুষ, নারী, প্রতিটি হল, প্রতিটি বিভাগ ও প্রত্যাশা) থেকে প্রদত্ত ভোটকে ১০০ শতাংশ ধরে নেওয়া হয়। তারপর প্রতিটি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ওই শ্রেণিগুলোর মধ্যে কত শতাংশ তা হিসাব করা হয়।

জরিপে দেখা গেছে, ভোট দিতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৯৪ দশমিক ৮ শতাংশ এবং বাকি ৫ দশমিক ১৮ শতাংশ ভোট দিতে আগ্রহী নন। সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ভোট দেবেন কি না তা নিয়ে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। তবে বাকি ৭৫ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের মধ্যে শামীম হোসেনের পক্ষে মতামত দিয়েছেন ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ, আবু সাদিক কায়েমের পক্ষে ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ, আবিদুল ইসলামের পক্ষে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ এবং উমামা ফাতেমার পক্ষে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটার।

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ভোট কাকে দেবেন তা ঠিক করেছেন ৬৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৩৩ দশমিক ৯ শতাংশ এখনও সিদ্ধান্ত নেননি। যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে আরাফাত চৌধুরীর পক্ষে মত দিয়েছেন ১৬ দশমিক ১ শতাংশ, মেঘমল্লার বসুর পক্ষে ৯ দশমিক ১২ শতাংশ, এস এম ফরহাদের পক্ষে ৩২ দশমিক ১ শতাংশ, তানবীর বারি হামিমের পক্ষে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ এবং আবু বাকের মজুমদারের পক্ষে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।

সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ভোট দেওয়ার বিষয়ে ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও মনস্থির করেননি। যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে তানবীর আল হাদী মায়েদের পক্ষে মত দিয়েছেন ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, মহিউদ্দিন খানের পক্ষে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ, আশরেফা খাতুনের পক্ষে ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং জাবির আহমেদ জুবেলের পক্ষে ৪ দশমিক ০৭ শতাংশ শিক্ষার্থী।

সব মিলিয়ে জরিপের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী পরিষদ সামগ্রিকভাবে এগিয়ে আছে। তবে ন্যারেটিভ বলছে, যেহেতু এই জরিপটি কেবল আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে করা হয়েছে, তাই বিপুল সংখ্যক অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের মতামত এখানে প্রতিফলিত হয়নি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *