দুর্গাপূজায় ভারতে ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন, সুযোগ পেল ৩৭ প্রতিষ্ঠান

আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশের মোট ৩৭টি প্রতিষ্ঠান শর্তসাপেক্ষে এই রপ্তানির অনুমোদন পেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত রপ্তানির সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিকেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য ধরা হয়েছে সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার।

আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী (S H M Magfurul Hasan Abbasi) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে ইলিশ রপ্তানির এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তবে রপ্তানির ক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে রয়েছে—রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ মেনে চলা, শুল্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করা, পূর্বে অনুমোদিত পরিমাণের বিপরীতে প্রকৃত রপ্তানি সংক্রান্ত সব তথ্য-প্রমাণ পরবর্তী আবেদনকালে দাখিল করা। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, অনুমোদিত পরিমাণের বাইরে কোনোভাবেই রপ্তানি করা যাবে না। প্রতিটি চালান যাচাই করতে শুল্ক কর্তৃপক্ষ অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম ব্যবহার করবে।

এছাড়া এই অনুমতি হস্তান্তরযোগ্য নয় বলেও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অনুমোদিত রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নিজে রপ্তানি না করে অন্য কারও মাধ্যমে সাবকন্ট্রাক্টে দিতে পারবে না। সরকারের হাতে প্রয়োজনে যেকোনো সময় এই অনুমতি বাতিল করার ক্ষমতাও থাকবে।

এর আগে ৮ সেপ্টেম্বর ভারতে ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরদিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করে জানানো হয়, ১১ সেপ্টেম্বর অফিস চলাকালে আগ্রহী রপ্তানিকারকরা হার্ড কপিতে আবেদন করতে পারবেন। তখনই নির্ধারণ করা হয় প্রতিকেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানিমূল্য সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার, যা ডলারপ্রতি ১২২ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় দাঁড়ায় ১ হাজার ৫২৫ টাকা।

তবে এ সিদ্ধান্তের পর দেশের বাজারে ইলিশের উচ্চমূল্যের কারণে সমালোচনা শুরু হয়। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ কিনতে খরচ হচ্ছে কমপক্ষে ২ হাজার ১০০ টাকা, আর বড় আকারের মাছের দাম উঠছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। সমালোচনার মুখে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার (Farida Akhter) জানান, কোনো চাপের কারণে নয়; বরং প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় উৎসবকে সম্মান জানিয়ে ও সৌজন্যবোধের জায়গা থেকে এই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবার যে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, তা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।

প্রসঙ্গত, গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রথমে তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। পরে তা সংশোধন করে ২ হাজার ৪২০ টনে সীমাবদ্ধ করা হয়। সে সময় মোট ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তুলনায় এ বছর অনুমোদনকৃত পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টনে, আর অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৭-এ সীমিত রাখা হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *