প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি নিয়ে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনো কথা প্রধান উপদেষ্টা কখনোই বলেননি।
গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেস সচিব জানান, অনুবাদজনিত সমস্যার কারণে এ বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তার ভাষায়—যিনি সাক্ষাৎকারের অনুবাদ করেছিলেন, তিনি আংশিক বক্তব্য প্রেক্ষাপট ছাড়া উপস্থাপন করায় ভুল ব্যাখ্যা তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের বর্তমান স্ট্যাটাস সম্পর্কিত তথ্য জানিয়েছেন, কিন্তু কোনোভাবেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দেননি।
শফিকুল আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা কখনো বলেননি যে, নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হবে। অনুবাদের মাধ্যমে যদি কোনো বক্তব্যের অর্থ বিকৃত হয়, তা পুরোপুরি বিভ্রান্তিকর। সামগ্রিকভাবে বিচার করলে স্পষ্ট বোঝা যায়, আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার প্রশ্নই ওঠে না।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, এ বিষয়ে পিআইবি’র বাংলা ফ্যাক্ট চেক ইতোমধ্যেই সঠিক ব্যাখ্যা দিয়েছে। তার মতে, সরকারের কোনো পরিকল্পনাই নেই আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার। “যেখানে নিষেধাজ্ঞা আছে, সেটি বহাল থাকবে,” বলে তিনি মন্তব্য করেন।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রেস সচিব বলেন, “নির্বাচন কমিশনও একই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে দলটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। বিষয়টি একেবারেই পরিষ্কার।”
অনুবাদ নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অনুবাদকরা প্রায়শই একটি বাক্যের পূর্ববর্তী প্রেক্ষাপট উপেক্ষা করেন। ফলে আংশিক বাক্যকে ‘আউট অব কনটেক্সট’ভাবে তুলে ধরলে ভুল অর্থ তৈরি হয়। তার মতে, এই ক্ষেত্রে তৈরি হওয়া বার্তাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয় এবং বিভ্রান্তিকর।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো অনিশ্চয়তা আছে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, “এখানে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমরা আশা করি, জুলাইয়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সনদ দ্রুত স্বাক্ষরিত হবে। রাজনৈতিক দলগুলো তখন পুরোপুরি নির্বাচনে মনোনিবেশ করবে।”
তিনি আরও জানান, দেশের গ্রামাঞ্চল থেকেই নির্বাচনের উৎসাহ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। “প্রতিটি জায়গায় বড় বড় ব্যানার ঝুলছে, সম্ভাব্য প্রার্থীরা সক্রিয়ভাবে নিজের কথা প্রচার করছেন। এটি প্রমাণ করছে নির্বাচনের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আশা করছি, এই উত্তেজনা দিন দিন আরও বাড়বে,” বলেন প্রেস সচিব।