ইরানের জ্বালানি বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ভারতের আটজন নাগরিক ও নয়টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র (United States)। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তেহরানের অর্থনীতির ওপর চাপ বাড়ানোর নীতির অংশ হিসেবেই নতুন করে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। এ তথ্য প্রকাশ করেছে ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস (The Indian Express)।
খবরে বলা হয়, ইরানের তেল, পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য এবং পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগেই ভারতের এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট (U.S. State Department) ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যালজাত পণ্যের বাণিজ্যে জড়িত ৪০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। পাশাপাশি মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ অফিস (ওএফএসি) (Office of Foreign Assets Control – OFAC) আরও ৬০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজকে তালিকাভুক্ত করেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তারা ইরান থেকে তেল ও তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিদেশে পরিবহনে সহায়তা করেছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আটটি ভারতীয় রাসায়নিক ও পেট্রোকেমিক্যাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মুম্বাইভিত্তিক সিজে শাহ অ্যান্ড কো, কেমোভিক, মোডি কেম, পারিকেম রিসোর্সেস, ইনডিসল মার্কেটিং, হরেশ পেট্রোকেম, শিভ টেক্সকেম এবং দিল্লিভিত্তিক বিকে সেলস করপোরেশন।
একই তালিকায় রয়েছেন পাঁচজন ভারতীয় নাগরিক— কেমোভিকের পরিচালক পিয়ূষ মাগনলাল জাভিয়া, ইনডিসল মার্কেটিংয়ের পরিচালক নীতি উনমেশ ভাট, এবং হরেশ পেট্রোকেমের পরিচালক কমলা কাসাত, কুনাল কাসাত ও পুনম কাসাত।
অন্যদিকে, ওএফএসি’র তালিকায় আরও তিনজন ভারতীয়ের নাম এসেছে— বরুণ পুলা, আয়াপ্পান রাজা ও সোনিয়া শ্রেষ্ঠা। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইরানি এলপিজি পরিবহনকারী জাহাজগুলোর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং বিদেশি ক্রেতাদের কাছে এসব পণ্য পৌঁছে দিতে ভূমিকা রেখেছেন।
এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার মাধ্যমে ইরানের তেল রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যে যুক্ত নেটওয়ার্কগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের নজরদারি আরও জোরদার হলো বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তবে এ ঘটনায় ভারতীয় পক্ষের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি।