বর্তমানে বাজারে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছেছে, যা শিল্প ও গৃহস্থালি খাতে ব্যবহারকারীদের জন্য একটি বড় চাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এই মূল্য ১ হাজার টাকার মধ্যে রাখা উচিত বলে মনে করেন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান (Muhammad Faozul Kabir Khan)।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে এলপিজি: অর্থনীতি, পরিবেশ ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক পলিসি কনক্লেভে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। কনক্লেভের আয়োজন করে দৈনিক বণিক বার্তা।
ফাওজুল কবির খান বলেন, “এলপিজির ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা এখন দাম। অনেক স্থানে সিলিন্ডারের দাম ১৪০০–১৫০০ টাকা পর্যন্ত গিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। দাম নিয়ন্ত্রণ, লজিস্টিক কাঠামো উন্নয়ন এবং প্রাইভেট খাতকে আরও কার্যকর করার বিকল্প নেই।” তিনি যোগ করেন, শুধুমাত্র দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক মানসিকতা থাকলেই দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব।
জ্বালানি উপদেষ্টা এও অভিযোগ করেন যে, দেশের প্রাথমিক জ্বালানির ঘাটতি কোনো স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ফল নয়, বরং এটি কিছু ক্ষমতাসীন রাজনীতিবিদ ও তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর পরিকল্পিত অপব্যবহারের ফসল। তিনি বলেন, “বিদ্যুৎ উৎপাদন ও গ্যাস নেটওয়ার্কের পরিকল্পনায় গ্যাসের প্রকৃত চাহিদাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এর ফলে শিল্প ও গৃহস্থালি খাতে ব্যাপক অবৈধ সংযোগের বিস্তার ঘটেছে।”
এছাড়াও তিনি জানান, দেশের নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন প্রতিবছরই কমছে। “প্রতি বছর প্রায় ২০০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট উৎপাদন কমে যাচ্ছে, অথচ আমরা নতুনভাবে সংগ্রহ করতে পেরেছি মাত্র ৭০ মিলিয়ন কিউবিক ফুট,” বলেন তিনি। এই ঘাটতি মোকাবিলায় বাধ্য হয়েই সরকার এলএনজি (LNG) আমদানি করছে। যদিও এর উচ্চমূল্যের কারণে সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে, তবে এলএনজি আমদানি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। তাই স্বল্পমেয়াদে দেশের চাহিদা পূরণে এলপিজি (LPG) হতে পারে একটি কার্যকর ও বিকল্প মাধ্যম।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি (BNP) জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান (Abdul Moyeen Khan) এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (Bangladesh Energy Regulatory Commission – BERC)-এর চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ (Jalal Ahmed)।