জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের চারটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল। বুধবার (১৫ অক্টোবর) এক যৌথ ঘোষণায় তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবিত জুলাই সনদে সংবিধানের চার মূলনীতি অনুপস্থিত থাকায় এবং আরও কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে আপত্তি থাকায় তারা এতে সই করবে না।
এই চার দল হলো — বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশ জাসদ এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী)।
অন্যদিকে, গণফোরাম জানিয়েছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাসংক্রান্ত টেলিগ্রাম এবং ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত না করা হলে তারাও এতে সই করবে না।
রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগামীকালের মধ্যে যদি আমাদের অবস্থান প্রতিফলিত করে জুলাই সনদে সংশোধন না আনা হয়, তাহলে আমরা এতে স্বাক্ষর করব না।’
বামপন্থী জোটের পক্ষ থেকে বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘জুলাই সনদের পটভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস প্রতিফলিত হয়নি, তাই আমরা এতে স্বাক্ষর করব না।’
তিনি আরও জানান, জুলাই সনদের ৮৪ দফা সুপারিশের মধ্যে চারটি বাম দলের দেওয়া ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট সংক্রান্ত ব্যাখ্যাগুলোও অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
বজলুর রশিদ ফিরোজ আরও বলেন, ‘আমরা কয়েকটি অঙ্গীকারের বিরোধিতা করেছি। এর মধ্যে অন্যতম হলো—জুলাই সনদকে কোনো আদালতে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। এই কারণেও আমরা এতে স্বাক্ষর করব না।’
এদিকে এনসিপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংবিধান আদেশ জারি না হলে তারা সনদে সই করবে না। এনসিপি মনে করে, জুলাই ঘোষণাপত্রের সময় তারা ছাড় দিয়েছিল, এবার আর ছাড়ের সুযোগ নেই। বিশেষ করে সংবিধান সংস্কারের বিষয়টি তারা নতুন করে আলোচনায় আনতে চায়।
চূড়ান্ত খসড়ায় বাস্তবায়নের পদ্ধতি উল্লেখ না থাকায় জামায়াতে ইসলামী-এর সই করা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। দলটির এক নীতিনির্ধারক আজ বলেন, “যতটুকুতে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে, সেটি যদি সনদে প্রতিফলিত হয়, আমরা অবশ্যই সই করব। তবে শুনছি, এই সনদ নিয়ে নানা অপতৎপরতা চলছে।”