তিস্তা নদী রক্ষায় এবং বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের কাউনিয়া পয়েন্ট থেকে শুরু হয় এক অনন্য মশাল প্রজ্জ্বলন কর্মসূচি। তিস্তার তীরজুড়ে, বিশেষ করে নদী ও সেতু এলাকায়, লাখো মানুষের হাতে জ্বলে ওঠে প্রতীকী প্রতিবাদের আগুন। এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের নেতৃত্বে ছিল লালমনিরহাট জেলা বিএনপি (Lalmonirhat District BNP) এবং তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন (Teesta River Protection Movement)-এর নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু (Asadul Habib Dulu) কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন এবং উপস্থিত জনতার উদ্দেশে এক উজ্জীবনী বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন,
“আমরা কখনো শোভাযাত্রা, কখনো অবস্থান কর্মসূচি, কখনো গণমিছিল, আবার কখনো স্মারকলিপি দিয়েছি — কিন্তু সরকার এখনো তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তিস্তা শুধু লালমনিরহাটের নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা।”
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, “রংপুর বিভাগের নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা—এই পাঁচ জেলার ১০৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তিস্তা একসময় মায়ের মতো আপন ছিল। এখন সেটিই হয়ে উঠেছে দুঃখের কারণ। রংপুর অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা এই নদীর সঙ্গেই জড়িত। তিস্তা শান্ত থাকলে পুকুরের পানির মতো শান্ত, আর রাগলে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়।”
দুলু তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি তাৎক্ষণিক উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন তিস্তা বাঁচাও ও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ (Teesta Bachao O Nodi Bachao Sangram Parishad)-এর সভাপতি নজরুল ইসলাম হাক্কানীসহ স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা একক কণ্ঠে দাবি জানান—তিস্তার ন্যায্য পানিবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে, নদীভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করতে হবে, এবং কৃষি উন্নয়নে টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
লালমনিরহাট থেকে শুরু হয়ে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা পর্যন্ত ১০৫ কিলোমিটারজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই মশালের আলো, যেনো তিস্তার ন্যায্য অধিকারের দাবিতে এক নতুন আলোর প্রতীক হয়ে ওঠে।