হাইকোর্টে জামিনের পরও মুক্তি মেলেনি বিএনপি নেতা, ‘উপর মহলের’ হস্তক্ষেপের অভিযোগ

হাইকোর্ট থেকে জামিন আদেশ পাওয়ার পরও মুক্তি পাননি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক চেয়ারম্যান শাহআলম সরকার (Shah Alam Sarkar)। সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া ও কারাগারের ফরমালিটি সম্পন্ন হওয়ার পরও হঠাৎ ‘উপর মহলের নির্দেশে’ তাকে ফের কারাগারে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন তার আইনজীবী ও সহকর্মীরা।

সোমবার (২০ অক্টোবর) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিষয়ে বিস্তৃত অভিযোগ তোলা হয়। সেখানে দাবি করা হয়, আলোচিত ত্রিপল হত্যা মামলায় প্রকৃত আসামিকে আড়াল করতেই শাহআলম সরকারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধান ব্যক্তি শিমুল চেয়ারম্যান এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে, অথচ মামলার এজাহারে না থাকা ও বয়স, পরিচয়ের ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও শাহআলম সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “এজাহারে যেই শাহআলমের নাম আছে তার বয়স ৪০ বছর, পিতার নাম অজ্ঞাত। অথচ আমাদের চেয়ারম্যান শাহআলমের বয়স ৭৫, এবং তিনি বহু বছর আকবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। এমন একজন পরিচিত মানুষকে এইভাবে ফাঁসানো অত্যন্ত লজ্জাজনক।”

আইনি লড়াইয়ের পর দীর্ঘ দুই মাস ২৩ দিন কারাভোগের পর হাইকোর্ট (High Court) থেকে জামিন পান শাহআলম সরকার। আইনজীবীরা জামিনের কাগজ যথাযথভাবে দাখিল করে বিকেল ৩টার মধ্যেই কারাগারে পৌঁছান। কারাগারের সব নিয়মকানুন ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জেলখানা প্রস্তুত ছিল তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য। তবে জেলার রুমে হঠাৎ একটি ফোন আসে এবং জানানো হয়, “উপর মহলের নির্দেশ আছে, তাকে ছাড়া যাবে না।” এর পরেই তাকে আবার কারাগারের ভেতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, এ ঘটনাটি ক্ষমতার অপব্যবহারের চরম দৃষ্টান্ত। বক্তারা বলেন, “যেভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার সময় রাজনৈতিক নেতাদের জেলগেট থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হতো, আজকেও যেন সেই চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমরা এমন ঘটনা আর দেখতে চাই না।”

বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, এই ষড়যন্ত্র শুধু শাহআলম সরকারকে আটকে রাখার জন্য নয়, মুরাদনগরের বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার অপচেষ্টা। তাঁরা এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উচ্চ মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন এবং অবিলম্বে শাহআলম সরকারকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, এডভোকেট তৌহিদুর রহমান, উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি কাজী তাহমিনা আক্তার, এডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ, এডভোকেট সরকার মাহমুদ গিয়াসউদ্দিন, এডভোকেট মহসিন ও এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক।

অন্যদিকে, কারাগার থেকে এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে কুমিল্লা (Comilla) জেলার সিনিয়র জেল সুপারকে একাধিকবার ফোন ও মেসেজ দিলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *