বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২১ ব্যাচের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুসলিম ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর বুয়েট ক্যাম্পাসে উত্তাল হয়ে ওঠে। অভিযোগ আরও গুরুতর হয়ে ওঠে যখন জানা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ধর্ষণের পর ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গর্বভরে প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উত্তাল ছিল বুয়েট ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অভিযুক্তের স্থায়ী বহিষ্কার ও তাঁর বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ (Professor A K M Masud), যিনি বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের পরিচালক (DSW), আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সামনে এসে ঘোষণা দেন যে, অভিযুক্ত শ্রীশান্ত রায়কে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অধ্যাপক মাসুদ জানান, পরদিন বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘‘স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আমার নেই, আমি উপাচার্যের নির্দেশক্রমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছি।’’ তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং খুব শিগগিরই তাঁকে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বহিষ্কারের ঘোষণা শুনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং ‘না না’ বলে প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁরা স্পষ্টভাবে শ্রীশান্তের স্থায়ী বহিষ্কার ও দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অধ্যাপক মাসুদ আশ্বাস দেন, “যদিও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকেই মামলা করার কথা ছিল, আমরা তাঁদের অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুয়েট ক্যাম্পাসে এক উত্তপ্ত ও সংবেদনশীল পরিবেশের সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে প্রশাসনের দৃঢ় ও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ দেখতে চায়, যেন ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘৃণ্য কাজ করার সাহস না পায়।