নির্বাচনী জোট থাকলেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচন বাধ্যতামূলক: অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমোদিত আরপিও খসড়া

নির্বাচনী জোট গঠন করা হলেও প্রার্থীদের নিজেদের দলের প্রতীকে জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে—এমন বিধান যুক্ত করে নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) (Representation of the People Order) সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)-এর সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

অনুমোদিত খসড়ায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে তিন বাহিনীর সদস্যরা পুলিশের মতোই ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে আর আলাদা কোনো প্রশাসনিক আদেশের প্রয়োজন হবে না।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল (Asif Nazrul) সাংবাদিকদের জানান, “যদি নির্বাচনী জোট হয়, তাহলেও প্রার্থীকে নিজের দলের প্রতীকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সংক্রান্ত সব বিধান বিলুপ্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পলাতক আসামিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না—এই ধারা যুক্ত করা হয়েছে।”

ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আরও জানান, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রার্থীকে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে অর্জিত সব আয় ও সম্পত্তির বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই নির্দেশ দিয়েছেন এবং এই তথ্যগুলো অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীদের জামানতের পরিমাণ ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে, যা নির্ধারণ করবেন সংশ্লিষ্ট জেলার নির্বাচন কর্মকর্তা।

সংশোধিত আরপিওতে ‘না’ ভোটের বিধান পুনঃসংযোজন করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “যে আসনে একজন প্রার্থী থাকবেন, সেখানে ভোটাররা ‘না’ ভোট দিতে পারবেন।” এছাড়া কোনো সংসদীয় আসনে অনিয়ম ধরা পড়লে পুরো আসনের ভোটগ্রহণ বন্ধ করার ক্ষমতা থাকবে নির্বাচন কমিশন (Election Commission)-এর হাতে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *