ভারতে পালানোর সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী আজিজ

ভারতে পালাতে গিয়ে সীমান্তে গ্রেপ্তার হয়েছেন শামীম ওসমান (Shamim Osman)-এর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত আজিজুল ইসলাম আজিজ। চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও দর্শনা থানা-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দর্শনা থানার ওসি (তদন্ত) সুলতান মাহমুদ।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন আজিজ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক মামলা—যার মধ্যে রয়েছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, লুটপাট ও জালিয়াতির অভিযোগ। বিশেষ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় (Tejgaon Industrial Police Station) দায়ের হওয়া একটি চাঁদাবাজির মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (DMP) সূত্র জানায়, আজিজকে গ্রেপ্তারের জন্য তারা চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় থানার সহায়তা চেয়েছিল। এ বিষয়ে ডিবি তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার রাকিব খান বলেন, “আমরা স্থানীয় থানার সহায়তায় আজিজকে গ্রেপ্তার করেছি। চাঁদাবাজির মামলায় সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে এবং তদন্তের প্রয়োজনে তার রিমান্ড আবেদন করা হবে।”

তদন্তে উঠে এসেছে, ২০১৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আজিজ ও তার ঘনিষ্ঠরা তেজগাঁওয়ের এরশাদ গ্রুপের গোডাউন থেকে পণ্য লুট এবং মোটা অঙ্কের চাঁদা তুলে আসছিলেন। ওই ঘটনায় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে দায়ের হয় একটি মামলা, যাতে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৩০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত করছে গোয়েন্দা বিভাগ।

শুধু ঢাকায় নয়, নারায়ণগঞ্জেও রয়েছে আজিজের বিতর্কিত সম্পৃক্ততা। জানা গেছে, এরশাদ গ্রুপ (Ershad Group)-এর নারায়ণগঞ্জ কারখানার মেশিনারিজ ও মালামাল লুটে সরাসরি অংশ নেন তিনি। স্থানীয় থানায় তার বিরুদ্ধে এই সংক্রান্ত মামলাও রয়েছে। অভিযোগ আছে, এবি ব্যাংক থেকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল যে কারখানাটি, তা দখলের জন্য এরশাদ গ্রুপের চেয়ারম্যানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপরই শামীম ওসমান, আজিজ এবং তাদের সহযোগীরা সেখানে লুটপাট চালান।

আজিজকে এখন ঢাকায় এনে ডিবির হেফাজতে নেওয়া হবে এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য আদালতে হাজির করা হবে। পুলিশের ভাষ্যমতে, তার বিরুদ্ধে আরও মামলার তথ্য উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *