আরপিও সংশোধনে ভীষন চটেছেন তাহের

জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের শনিবার (১ নভেম্বর) কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পেশাজীবীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা লন্ডনে গিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের চাপে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। তাঁর মতে, এই পদক্ষেপ দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।

তাহের বলেন, দেশে একটি অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, জনগণ ফেব্রুয়ারিতে একটি জাতীয় নির্বাচন চায়, কিন্তু নির্বাচনের ঠিক আগে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করবে। এসময় তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, প্রধান উপদেষ্টা কোনো রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবেন না।

জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের গত বৈঠকে গৃহীত আরপিও সংশোধনের সিদ্ধান্ত একটি নির্দিষ্ট দলের অযৌক্তিক দাবির কাছে নতি স্বীকার করার সমান। তাঁর ভাষায়, “এর মাধ্যমে সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।” তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের কর্মকাণ্ড এখন একটি বিশেষ দলের প্রতি আনুগত্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে। তাহেরের দাবি, প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফরে সেই দলের চাপে রোডম্যাপ ঘোষণা ও পরবর্তী সিদ্ধান্তে পরিষদের আগের অবস্থান পরিবর্তন—সবই নিরপেক্ষতার ঘাটতির স্পষ্ট উদাহরণ।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতীক ব্যবহারের বিষয়ে সরকারের পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নিরপেক্ষতা হারানোর কারণ হয়েছে। তাহের স্পষ্টভাবে জানান, “আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না এবং এর তীব্র নিন্দা জানাই।” তাঁর মতে, নির্বাচন কমিশন ও উপদেষ্টা পরিষদ আগে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, প্রতিটি দল তাদের নিজস্ব প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে। “আমরা সেই সিদ্ধান্তের পক্ষেই আছি এবং জাতিও এর সঙ্গে একমত,” বলেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি আগের সিদ্ধান্ত পুনর্বহালের দাবি জানান, অন্যথায় এ বিষয়ে রাজপথে প্রতিবাদের ঘোষণা দেন।

জুলাই সনদ ইস্যুতে তাহের আরও বলেন, “এই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাওয়া মানে হবে নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি পরিত্যাগ করা।” তাঁর মতে, প্রধান উপদেষ্টা যদি এ থেকে পিছিয়ে যান, তবে তা হবে নিজের পরিকল্পনাকেই ধ্বংস করা। তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রধান উপদেষ্টা দৃঢ় অবস্থান নিয়ে সংস্কার বাস্তবায়নে সাহসী ও সঠিক সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *