জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের কোনো বাস্তবতা নেই মন্তব্য করে বিএনপির (BNP) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) বলেছেন, “গণভোটের প্রয়োজন ছিল না, তবুও জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে আমরা সম্মত হয়েছি।” একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজন করা হোক, কারণ আলাদা গণভোটে খরচ বাড়বে এবং অযথা সময় নষ্ট হবে। অথচ এরপরও বিএনপির বিরুদ্ধে ‘নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চায়’—এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ তার।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অপরিহার্য’ শীর্ষক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম। সমাবেশ শেষে ৭ নভেম্বরের চেতনাকে সামনে রেখে একটি মিছিল বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।
গণভোট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট করার প্রস্তাব দিয়েছি। আলাদা করে গণভোট করলে অতিরিক্ত হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। নির্বাচন ও গণভোট একইসঙ্গে করাই যুক্তিসঙ্গত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে আগে গণভোট হবে, তারপর নির্বাচন। অথচ আমরা কখনও নির্বাচন পেছানোর কথা বলিনি, বরং বারবার বলেছি নির্বাচন দ্রুত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই দেশে মানুষকে মিথ্যা কথা বলে প্রতারণা করবেন না। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে একটি মহল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে দিতে চায়। কিন্তু তারা সফল হবে না। কারণ ৭১-ই আমাদের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়া এই দেশ ষড়যন্ত্রকারীদের ছাড় দেবে না।”
পিআর (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির সম্ভাবনা নিয়েও বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে। পিআর পদ্ধতি থাকবে কি না, তা নির্ধারণ করবে আগামী সংসদ।”
অন্যদিকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, “এটা আমাদের জন্য এক কঠিন সময়। এটি একটি পরীক্ষা। আমরা কতটা ধৈর্য ধরে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি, সেটাই এখন মূল বিষয়। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, যেকোনো সময় হামলা হতে পারে। কিন্তু তিনি বলেননি, কোথা থেকে হামলা আসবে। জাতিকে সেটা বলা দরকার ছিল। এ দেশের মানুষ জানে কিভাবে প্রতিরোধ করতে হয়। জনগণকে ভয় দেখিয়ে কিছু করা যাবে না। এই জাতি গণতন্ত্র চায়, চায় মুক্তভাবে বাঁচার অধিকার।”
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত।


