নতুন জোট গঠনের চেষ্টায় মাঠে জাতীয় পার্টির দুই অংশ

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (Anisul Islam Mahmud) নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির (একাংশ) সঙ্গে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর (Anwar Hossain Manju) নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ১৪-দলীয় জোটের শরিক দল জাতীয় পার্টি (জেপি) একসঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে একটি নতুন রাজনৈতিক জোট গঠনের উদ্যোগ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে এ জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।

জাতীয় পার্টি (একাংশ)-এর মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (ABM Ruhul Amin Howlader) বলেন, “আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে জোটগত রাজনীতি চলে আসছে। বড় বড় দলগুলো জোট গঠনের মাধ্যমে নির্বাচন করছে। আমরাও সমমনা দলগুলো নিয়ে জোট গঠনে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই জোটের কার্যক্রম শুরু হবে।”

জোট গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চুন্নু (Mujibul Haque Chunnu)। তিনি বলেন, “একটি সুস্থ ধারার রাজনীতিকে বিকশিত করতে এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনার মধ্য দিয়ে জোট গঠনের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি। শিগগিরই এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব।”

দলীয় সূত্র জানায়, জাতীয় পার্টি (একাংশ) ও জেপি ছাড়াও আরও কয়েকটি দলকে জোটে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ইলিয়াস কাঞ্চন ও শওকত মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জনতা পার্টি বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (মতিন), জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) সহ আরও কিছু দল, যারা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং ইসলামী ভাবধারায় বিশ্বাসী।

উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় পরিবর্তন আসে। সরকার পতনের পরপরই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এর প্রভাব পড়ে দীর্ঘদিন সংসদের বিরোধী দল হিসেবে থাকা জাতীয় পার্টিতেও। সেখানে ভাঙনের সৃষ্টি হয় এবং গঠিত হয় আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টির (একাংশ)। সেই থেকেই আলাদা সত্তায় পথচলা শুরু করে এই অংশটি।

এদিকে জোটের অন্যতম শরিক হতে যাওয়া জেপি সম্পর্কে চুন্নু বলেন, “জেপির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়নি, দলটি এখনও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। সরকার কিংবা কমিশন কোনো বাধা দেয়নি, তাই আমরা তাদের সঙ্গে রাজনীতি করতে পারি।”

নতুন এই রাজনৈতিক জোট গঠনের মূল লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ। চুন্নু বলেন, “পরিস্থিতি অনুকূল হলে এবং আলোচনার ভিত্তিতে আমরা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *