পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে তীব্র বিরোধ—বোনদের অভিযোগে ডিপজলের বিরুদ্ধে হুমকি ও বঞ্চনার অভিযোগ

অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল (Monowar Hossain Dipjol)-এর তিন বোন পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে বহু বছরের চলমান উত্তেজনার প্রসঙ্গ তুলে ধরে অভিযোগ করেছেন, ভাইয়েরা—বিশেষ করে ডিপজল—পরিবারের সম্পত্তির বেশিরভাগ নিজেদের দখলে রেখেছেন এবং বোনদের ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করছেন। তাদের দাবি, বাবার মৃত্যুর পর প্রায় চার দশক পেরিয়ে গেলেও সম্পত্তি বণ্টনের ক্ষেত্রে তাদের প্রতি কোনো গুরুত্ব দেখানো হয়নি।

ডিপজলের বড় বোন নূরজাহান বেগম লায়লা জানান, তাদের বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সম্পত্তি নিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি মিললেও কোনো ব্যবস্থাই বাস্তবে কার্যকর হয়নি। তার অভিযোগ, ভাইয়েরা সম্পত্তির সিংহভাগ ভোগ করছেন, অথচ তাদের দাবি ও প্রয়োজনের দিকে কেউ তাকাননি। পরিবারের ভেতর যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা থেকে শুরু করে অসুস্থ হয়ে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু এবং পরে বড় ভাইয়ের মৃত্যুর মতো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবার আরও বিপর্যস্ত হয়েছে বলেও লায়লার মন্তব্য।

আরেক বোন পারভীন বেগম বলেন, তারা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন—পৈতৃক সম্পত্তির একটি অংশ প্যাকেজ আকারে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে বাকি অংশ থেকেও বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা তাদেরকে নতুন করে আতঙ্কিত করেছে। তার ভাষায়, সম্পত্তির ভাগ চাইলে তারা শুধু অবহেলিতই নন, বরং জীবননাশের মতো হুমকির মুখেও পড়ছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তাদের স্বামী-সন্তানদের ‘না পাওয়ার’ হুমকি দেওয়া হয়েছে, যা বোনদের ভয় ও উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও হুমকির অভিযোগে বোনেরা শেষ পর্যন্ত আদালতের শরণাপন্ন হন, যেখানে তারা নিজেদের পক্ষে একটি আদেশ পেয়েছেন বলে জানান। তবুও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে তাদের উদ্বেগ কাটছে না। স্বামী ও সন্তানরা বাইরে গেলে তারা সারাক্ষণ চিন্তায় থাকেন—কোনো অঘটন যেন না ঘটে। এই কারণেই তারা গণমাধ্যমের সামনে এসে বিষয়টি খোলামেলাভাবে তুলে ধরেছেন, যাতে জনসমর্থন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়।

বোনদের দাবি, তারা শুধু তাদের ন্যায্য অধিকার চান—কোনো ধরনের ক্ষতি বা প্রতিশোধের শিকার না হয়ে। একই সঙ্গে দেশবাসীর কাছে দোয়া, সহানুভূতি ও সহযোগিতা চেয়েছেন তারা। তাদের কথায়, জনসমর্থনই এখন তাদের প্রধান ভরসা।

এই পুরো ঘটনাটি একটি পরিবারের দীর্ঘদিনের সম্পত্তি-বিবাদ, আইনি লড়াই এবং নিরাপত্তাজনিত সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে, যা সামাজিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং জনমানসে সহানুভূতি তৈরি করেছে।

তবে এক ফেসবুক পোস্টে ডিপজল তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শিল্পীদের অনেকেই এই অভিযোগে বিস্মিত হয়েছেন; কারণ চলচ্চিত্রাঙ্গনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিপজলের দান-অনুদান ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত—কিন্তু নিজের বোনদের প্রতি এমন আচরণের অভিযোগ তাদের চোখে অস্বস্তির জন্ম দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *