ইউনূসের সহায়তায় হাতিয়ার ব্লকবাঁধ প্রকল্পে ২১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ নিশ্চিতের দাবি হান্নান মাসউদের

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) স্যারের সহযোগিতায় হাতিয়ার ব্লকবাঁধ নির্মাণে ২১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ নিশ্চিত হয়েছে—এ দাবি তুলে ধরেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে শাপলা প্রতীক নিয়ে নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে মনোনয়ন পাওয়ার পর আফাজিয়া বাজারে পথসভায় তিনি এই কথাগুলো তুলে ধরেন।

পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে হান্নান মাসউদ বলেন, “অনেকে বলে ক্ষমতায় এসে নাকি সব করে ফেলবে—ব্লকবাঁধ করবে। কিন্তু মোহাম্মদ আলী (আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি) করেননি, তার আগেও কেউ কিছু করেনি। কেন আফাজিয়া বাজার থেকে ১৫ কিলোমিটার ভাঙতে হলো? এর সব দায় মোহাম্মদ আলীর।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, স্পিডবোট ভাড়া ৪০০–৫০০ টাকা হওয়া নতুন কিছু নয়; বরং মোহাম্মদ আলীর আগের সময়েও এসব বাড়তি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। তেলের দাম ৬৫ টাকা থাকা সত্ত্বেও জনসাধারণের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টিও তিনি প্রশ্নবিদ্ধ করেন।

হান্নান মাসউদ জানান, তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পুরো হাতিয়ার জন্য সাড়ে ২১ কিলোমিটারের স্থায়ী ব্লকবাঁধ ও বেড়িবাঁধ প্রকল্প প্রস্তুত করেছেন। তার ভাষায়, “সুখচর থেকে বাংলা বাজার পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার ব্লক এবং তার ১০০ মিটার উপরে স্থায়ী বেড়িবাঁধের জন্য ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। আমাদের বলা হয়েছিল ৮০০ কোটির মধ্যেই কাজ করতে হবে। তখন আমি ইউনূস স্যারকে বলেছি—এ প্রকল্পে অন্তত ২১০০ কোটি টাকা লাগবে। সেই বরাদ্দ এখন পাওয়া গেছে। প্রথম ধাপে সাড়ে ১১ কিলোমিটারের কাজই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ।”

দলমত নির্বিশেষে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি-গণঅধিকার—যে দলই থাকুক, হাতিয়ায় যারা আছেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন। দ্বীপ হাতিয়াকে বাঁচাতে হবে। ভূমিদস্যু, জলদস্যু, নদী ভাঙন—সব বিপদ থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দলমতের বাইরে এসে হাতিয়াকে বদলাই।”

তিনি আরও সতর্ক করেন, “হাতিয়াকে বাঁচাতে হলে দলে দলে লড়াই করা যাবে না। মারামারি-হানাহানি করলে হাতিয়ার মানুষের মুক্তি নেই। নিজেদের বিরোধ অমঙ্গলই ডেকে আনবে।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে হান্নান মাসউদ বলেন, “আমি আজ এখানে কোনো নির্বাচনী জনসভা করতে আসিনি। যদিও দল আমাকে শাপলা কলি প্রতীক দিয়েছে। কিন্তু হাতিয়ার মানুষ না চাইলে আমি নির্বাচনে নামব না। তারা চাইলে তবেই অংশ নেব। হাতিয়ার উন্নয়নের স্বার্থেই আমরা কোনো দলের বিরুদ্ধে কথা বলব না। প্রয়োজনে সবাইকে নিয়ে একটি নতুন হাতিয়া গড়বো।”

এদিকে পথসভাকে ঘিরে দুপুর থেকে দ্বীপের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল নিয়ে মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে আফাজিয়া ঘাট এলাকায়।
পথসভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) হাতিয়া উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী শামছুল তিব্রিজ, হাতিয়া উপজেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা, ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ নিরবসহ এনসিপির কেন্দ্রীয় ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *