ওমরাহ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রলোভনের অভিযোগ জামায়াত প্রার্থীর বিরুদ্ধে

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৩ মুরাদনগর (Cumilla-3 Muradnagar) আসনে জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) প্রার্থী ইউসুফ হাকিম সোহেলের বিরুদ্ধে ভোটারদের ওমরাহ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ঘিরে এই অভিযোগ ঘনীভূত হয়েছে, যা নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, মুরাদনগরের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইউসুফ হাকিম সোহেল এক ভোটারকে উদ্দেশ করে বলছেন, “আমি যদি এমপি নির্বাচিত হই! আপনাকে নিয়ে উমরাহ করতে যাব।” ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয়ভাবে বিতর্কের ঝড় ওঠে। সচেতন নাগরিকদের অনেকে বিষয়টিকে জনসাধারণের সঙ্গে উপহাস হিসেবে দেখছেন।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী ভোটারদের প্রভাবিত করতে অর্থ, প্রতিশ্রুতি বা উপহার দিতে পারেন না। তা সত্ত্বেও ইউসুফ হাকিম সোহেল প্রকাশ্যে উমরাহ করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

নবীয়াবাদ আব্দুল ওয়াদুদ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বদিউল আলম বলেন, “কাউকে ওমরাহ তে নিয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ। কিন্তু যদি এর পেছনে শর্ত থাকে বা সেটা হয় স্বার্থান্বেষী উদ্দেশ্যে—তবে সেটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। আগে জান্নাতে নেওয়ার কথা বলতো, এখন ওমরাহ’র প্রলোভন দেখায়—এগুলো জনতার সঙ্গে প্রতারণার নামান্তর।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জামায়াত প্রার্থী ইউসুফ হাকিম সোহেলের মুঠোফোন নম্বরে (০১৮৭২-৩২৮৬০৫) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে কুমিল্লা-৩ আসনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী এ ধরনের প্রলোভন দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। কেউ যদি তা করে থাকে, দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”

এই ঘটনা কেবল একজন প্রার্থীর আচরণ নিয়েই প্রশ্ন তুলছে না, বরং দেশের নির্বাচনী পরিবেশ এবং ভোটারদের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েও নতুন করে ভাবনার জন্ম দিয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *