হাসনাতের বক্তব্য ঘিরে দিল্লির উত্তেজনা ‘অবান্তর’—পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন

হাসনাত আব্দুল্লাহর সাম্প্রতিক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দিল্লিতে যে ধরনের উত্তেজনা বা উদ্বেগের কথা বলা হচ্ছে, তা একেবারেই অবান্তর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন (Touhid Hossain)। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশ কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাস করে না এবং কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে নিজের ভূখণ্ডে আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

বুধবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একজন রাজনৈতিক নেতা ব্যক্তিগতভাবে অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ সরকার কখনোই সন্ত্রাসবাদ বা বিচ্ছিন্নতাবাদকে সমর্থন করবে না। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থান সুস্পষ্ট এবং প্রশ্নাতীত।

তিনি আরও বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ভারতে অবস্থান করে আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য দিতেন, আর এখন সংবাদমাধ্যমেও নিয়মিত বক্তব্য রাখছেন। তার এসব বক্তব্যে উসকানিমূলক উপাদান রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তৌহিদ হোসেন। আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি পাশের দেশে বসে যদি অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করেন, তাহলে বাংলাদেশ আপত্তি জানাবেই—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ কারণেই বাংলাদেশ তাকে ফেরত চায়।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, ভারত এখনো শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাচ্ছে না, এমনকি তার বক্তব্যও বন্ধ করছে না। উল্টো সর্বশেষ তারা কিছু ‘নসিহত’ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন কেমন হবে, সে বিষয়ে প্রতিবেশী কোনো দেশের উপদেশ বাংলাদেশ গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়।

তার ভাষায়, বর্তমান সরকার অত্যন্ত ভালো পরিবেশে একটি নির্বাচন আয়োজন করতে চায়—যা গত ১৫ বছরে ছিল না। অথচ সেই সময়ের প্রহসনের নির্বাচনগুলো নিয়ে ভারত কোনো শব্দ করেনি। এখন বাংলাদেশ যখন একটি গ্রহণযোগ্য ও ভালো নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন ভারতের এ ধরনের উপদেশকে তিনি অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেন।

সম্প্রতি ভারতের ‘সেভেন সিস্টারস’ অঞ্চল নিয়ে হাসনাত আব্দুল্লাহর মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এসব বক্তব্য নিয়ে অযথা উত্তেজনা তৈরির কোনো কারণ নেই। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)-এর মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত বরাবরই মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে আসছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *