পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন (Md. Touhid Hossain) বলেছেন, ভারত সবসময় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের ভূমিকা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ছাড়া ভারতের পক্ষে এই বিজয় অর্জন করা সম্ভব ছিল না।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Foreign Affairs) কার্যালয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিজয় দিবস উপলক্ষে পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারত কলকাতায় এই দিনটিকে ভিন্নভাবে পালন করে— তারা এটিকে ইস্টার্ন কমান্ড দিবস হিসেবে উদযাপন করে। কারণ, তাদের ধারণা অনুযায়ী, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের সেনাবাহিনীই বিজয় অর্জন করেছে। তিনি স্বীকার করেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের বিজয় একটি বাস্তবতা। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে বিজয়ের কথা বলা হয়, সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অনস্বীকার্য।
তিনি আরও বলেন, ভারতের বিভিন্ন সামরিক সাহিত্য ও গবেষণা বিশ্লেষণ করলে বিষয়টি পরিষ্কারভাবে উঠে আসে। তার নিজের লেখালেখিতেও এ বিষয়ে একাধিক রেফারেন্স রয়েছে। ভারতের সামরিক বিশেষজ্ঞরাই স্বীকার করেছেন, মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর রেজিস্টেন্সকে নরম করে দিয়েছিলেন, তা না হলে ভারতের এই বিজয় অর্জনে অনেক বেশি সময় লাগতো। শুধু সময়ই নয়, এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বহুগুণে বাড়তো এবং অনেক বেশি মানুষ নি’\হত হতো।
তৌহিদ হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা শুরুতে প্রতিরোধ গড়ে তুললেও পরবর্তী সময়ে তা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয়। তিনি ব্যাখ্যা করেন, নয় মাসের কথা না ধরলেও অন্তত ছয় মাস ধরে মুক্তিযোদ্ধারা সম্পূর্ণভাবে সক্রিয় ছিলেন। বিশেষ করে জুন মাসের দিক থেকে তারা সংগঠিত ও সমন্বিতভাবে যুদ্ধ পরিচালনা শুরু করেন, যা যুদ্ধের গতিপথ বদলে দেয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার ভাষায়, যারা মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান অস্বীকার করেন, তারা মূলত মিলিটারি হিস্ট্রি বা মিলিটারি সায়েন্স সম্পর্কে অজ্ঞ। তিনি বলেন, এই অবদান অস্বীকার করার চেষ্টা করা হলেও তার কোনও বাস্তব অর্থ নেই। ইতিহাস ও সামরিক বিশ্লেষণ বারবার প্রমাণ করেছে— মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ছাড়া ভারতের পক্ষে এই বিজয় অর্জন করা সম্ভব ছিল না।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, গতকাল (মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর) রাত পর্যন্ত তার জানা মতে তারেক রহমান (Tarique Rahman) ট্রাভেল পাসের জন্য কোনও আবেদন করেননি।


