প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তনের ইঙ্গিত, বিএনপির কর্মশালায় ডাক পাননি একাধিক ঘোষিত নেতা

গত তিন দিন ধরে সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের নিয়ে বিএনপি (BNP) যে ধারাবাহিক কর্মশালা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে বেশ কিছু আলোচনার সূত্রপাত ঘটেছে। ঘোষিত কিছু প্রার্থীকে আমন্ত্রণ না জানানোয় গুঞ্জন উঠেছে, সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে প্রার্থী পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশেষ করে ঝালকাঠি-২ আসনের ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টুসহ বেশ কয়েকজন ঘোষিত প্রার্থী কর্মশালায় অনুপস্থিত ছিলেন। চট্টগ্রাম-৪ আসনের ক্ষেত্রে প্রার্থী কাজী সালাউদ্দিনের পরিবর্তে ডাকা হয়েছে আসলাম চৌধুরীকে। একইভাবে চট্টগ্রাম-৬ আসনের গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং যশোর-৬ আসনের কাজী রওনকুল ইসলামকে ডাকা হয়নি কর্মশালায়।

অন্যদিকে, এখনো প্রার্থী ঘোষণাহীন ২৪টি আসনের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-১ এ শাহাদাত হোসেন সেলিম এবং লক্ষ্মীপুর-৪ এ আশরাফ উদ্দিন নিজানকে ডাকা হয়েছে, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে এই দুই জনের প্রার্থিতা প্রায় চূড়ান্ত।

বিএনপি-র একাধিক সূত্র জানিয়েছে, কর্মশালায় আমন্ত্রিত ব্যক্তিদের তালিকা এসেছে হাইকমান্ডের নির্দেশেই। যাদের ডাকা হয়েছে, তারা মূলত চূড়ান্ত পর্যায়ের যাচাইয়ে উত্তীর্ণ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। দলের মিত্রদের জন্য কিছু আসন ছাড় দেওয়া নিয়েও আলোচনা চলছে, যা কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

কর্মশালার মূল প্রতিপাদ্য ছিল নির্বাচনের দিনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন কৌশল। তুলে ধরা হয় ফ্যামিলি কার্ড, হেলথ কার্ড, কৃষি কার্ডের মতো পরিকল্পনা এবং কীভাবে কৃষকদের ডিজিটাল নেটওয়ার্কে যুক্ত করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা যায়। প্রার্থীদের দেওয়া হয় ভোটার তালিকা ব্যবস্থাপনা, কেন্দ্রভিত্তিক প্রচারণা এবং ইলেকশন এজেন্টদের কার্যক্রম সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা।

প্রতিটি প্রার্থীকে চিঠির মাধ্যমে কর্মশালায় আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে উল্লেখ করা ছিল নির্বাচনি এলাকার জন্য মনোনীত একজন ইলেকশন এজেন্ট, দুইজন প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম পোলিং এজেন্ট এবং একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজারের তথ্য নিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশনা।

দলটির সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচনি দিন ও প্রচারণা ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ ও সংগঠিত করে তুলছে বিএনপি। কর্মশালার পর নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রকৃত তথ্য পৌঁছে দিতে, যাতে জনগণ আগেভাগেই জানতে পারে বিএনপির পরিকল্পনা কী। এর ফলে ভুল তথ্যের সুযোগ কমবে এবং ভোটাররা নিজেরাই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

এই কর্মশালার সূচনা হয় বুধবার, যেখানে প্রথম দিনে পঞ্চগড়-১ থেকে শুরু করে রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের প্রার্থীদের সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) ভার্চুয়াল মতবিনিময় করেন। দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার বরিশাল, ময়মনসিংহ ও ঢাকার প্রার্থীদের সঙ্গে এবং শনিবার ফরিদপুর, সিলেট, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বিভাগের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। প্রতিটি অধিবেশনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *