ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে লড়াই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর আগেই আলোচনায় এসেছেন বরিশালের একটি সংসদীয় আসনে গণঅধিকার পরিষদ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এক যুবক।
সংসদ সদস্য (এমপি) পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে এ প্রবাসী নিজের ‘বার্ষিক আয়’ দেখিয়েছেন প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই ইয়ামিন এইচ এম ফারদিন নামের সম্ভাব্য ওই প্রার্থীকে নিয়ে আসনজুড়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।
মাত্র ৩২ বছর বয়সী এ যুবকের আয়ের উৎস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কেউ কেউ দাবি জানিয়েছেন, প্রবাসে তার কথিত বৈধ বা অবৈধ ব্যবসার বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতালি প্রবাসী ইয়ামিন এইচ এম ফারদিন বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে গণঅধিকার পরিষদের দলীয় ট্রাক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
তিনি জেলার মুলাদী উপজেলার পশ্চিম নাজিরপুরের বাসিন্দা আমির হোসেন হাওলাদার ও মোসা. মমতাজ বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে বড়।
গণঅধিকার পরিষদের সহযোগী সংগঠন প্রবাসী অধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও প্রবাসী অধিকার পরিষদ ইতালি শাখার সভাপতি ফারদিন আজ সোমবার বরিশাল-৩ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
তবে দলীয় মনোনয়ন পেতে করা আবেদনপত্রে তার উল্লেখ করা ‘বার্ষিক আয়ের’ তথ্য সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন নিজেই। তার দাবি, ভুলক্রমে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) মনোনয়ন পেতে গত ২৪ অক্টোবর দলের নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে প্রাথমিক আবেদন ফরম জমা দেন ইয়ামিন এইচ এম ফারদিন।
ওই আবেদনপত্রে দলীয় পরিচয়ের পাশাপাশি নিজের পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ী। সেখানে তার বার্ষিক আয়ের কলামে লিখেছেন ‘প্রায় এক হাজার কোটি টাকা’। তবে ব্যবসার ধরন উল্লেখ নেই আবেদনপত্রে।
কালবেলার সঙ্গে আলাপকালে ইয়ামিন এইচ এম ফারদিন বলেন, তিনি ইতালি প্রবাসী। তার বাবা গ্রামে ধান-চালের ব্যবসা করেন।
গ্রামে তাদের অনেক কৃষি জমি রয়েছে। তিনি নিজে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ইতালিতে আছেন। সেখানে রেস্টুরেন্ট, এয়ার ট্রাভেল ও মানি ট্রান্সমিশনসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
তবে দলের মনোনয়ন পেতে পূরণ করা আবেদন ফরমে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বার্ষিক আয়ের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সেটা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন ইয়ামিন এইচ এম ফারদিন।
তিনি বলেন, ‘ভুলবশত এত টাকা বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে। পরে ওই আবেদন সংশোধন করে জমা দেওয়া হয়েছে।’
অবশ্য সংশোধিত আবেদন ফরমের অনুলিপি দেখতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি ফারদিন। তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় আবেদন ফরম যখন জমা দেওয়া হয়েছে তখন আমি দেশে ছিলাম না।
অন্য মাধ্যমে সংশোধিত আবেদন জমা দিয়েছি। তবে সেই আবেদনপত্রটি পরে আর সংরক্ষণ করা যায়নি।’ তা ছাড়া প্রবাসে ‘যেসব ব্যবসা’ পরিচালনা করেন তা থেকে বার্ষিক আয় কত?
তাও সুনির্দিষ্টভাবে জানাতে পারেননি ফারদিন। তিনি বলেন, আয়-ব্যয়ের হিসাব রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেবেন। সূত্র-কালবেলা


