ভারতে হোলি উদযাপনে ঢেকে দেওয়া হলো ৬০টি মসজিদ, আটক ১,০০০-র বেশি মুসলিম

ভারতে হোলি উৎসব ঘিরে মুসলিমদের প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) দেশটিতে হোলি উদযাপিত হলেও, তার আগেই উত্তরপ্রদেশে ৬০টিরও বেশি মসজিদ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এছাড়াও, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার নামে এক হাজারেরও বেশি মুসলিমকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশে ব্যাপক ধরপাকড়

ভারতের উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) রাজ্যের সাম্ভল জেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হোলির সময় শান্তি বজায় রাখার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ১,০১৫ জন মুসলিমকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৬০টিরও বেশি মসজিদ ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, যার মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ।

মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বাধা?

এ বছর হোলি উৎসবের দিন রমজান মাস ও শুক্রবার পড়ায় মুসলিমদের ধর্মীয় কার্যক্রম ব্যাহত করার অভিযোগ উঠেছে। সংখ্যালঘু মুসলিমদের প্রতি বরাবরই কঠোর অবস্থান নেওয়া হয় বলে সমালোচনা রয়েছে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) সরকারের বিরুদ্ধে। এবারও অভিযোগ উঠেছে, মুসলিমদের হয়রানি করতে প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

বিতর্কিত মন্তব্য ও সহিংসতার অভিযোগ

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা আনুজ চৌধুরী (Anuj Chaudhary) হোলির আগে এক বক্তব্যে বলেন, “এক দিন জুমার নামাজ না পড়লে মুসলিমদের কী এমন ক্ষতি হবে? বছরে হোলি একবার আসে, কিন্তু জুমার নামাজ ৫২ বার হয়।” তার এই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

এছাড়া, হোলির দিনে নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছেন মুসলিমরা। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে হামলার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

ভারতের দ্বৈত নীতি?

বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের অভিযোগ থাকলেও ভারত নিজ দেশে মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় বারবার বাধা সৃষ্টি করছে। অথচ, তারা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রচারণা চালিয়ে থাকে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের এ ধরনের কর্মকাণ্ড তাদের দ্বৈত নীতিরই প্রমাণ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *