জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস (Antonio Guterres) এর কাছে আওয়ামী লীগের (Awami League) বিচারের জন্য সাহায্য চেয়েছেন তরুণরা। শনিবার দুপুরে শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে (Hotel Intercontinental) জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা (Umama Fatema)।
আওয়ামী লীগের বিচার ও জাতিসংঘের ভূমিকা
উমামা ফাতেমা বলেন, “আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া প্রয়োজন। আমরা জাতিসংঘকে বলেছি যে, এখানে যেন ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়। জাতিসংঘ কি কোনোভাবে আমাদেরকে গাইড করতে বা সহায়তা করতে পারে কিনা, তা জানতে চেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ইতোমধ্যে ২০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। আমরা এই বর্ডার কিলিং বন্ধের জন্য ছাত্রদের পক্ষ থেকে দাবি জানিয়েছি।”
রাজনৈতিক বৈঠকে যুব প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ
উমামা ফাতেমা জানান, “আন্তোনিও গুতেরেস প্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে যুব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রতিনিধিরা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।”
তিনি বলেন, “আমরা সাধারণভাবে বলেছি, আমাদের একটি প্রজন্ম ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। আমাদের ছাত্ররা রাস্তায় যুদ্ধ করেছে, ঢাকার রাস্তাগুলো রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কমিশনার ভলকার টার্ক (Volker Turk) বলেছিলেন, বাংলাদেশকে প্রতিশোধের চক্র থেকে বের হতে হবে এবং আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া জরুরি।”
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার দাবি
উমামা ফাতেমা বলেন, “আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও তার সহযোগীদের বিচারের বিষয়টি তুলে ধরেছি। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে নেওয়া যায় কিনা, সে বিষয়ে জাতিসংঘের হস্তক্ষেপ চেয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা ভারতের আশ্রয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের মধ্যে সীমান্ত হত্যা একটি বড় ইস্যু। আমরা জাতিসংঘের কাছে সীমান্ত হত্যার স্থায়ী সমাধান চেয়েছি।”
সাইমা ওয়াজেদের নিয়োগ নিয়ে আপত্তি
উমামা ফাতেমা বলেন, “সাইমা ওয়াজেদ পুতুল (Saima Wazed Putul) বর্তমানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। আমরা বলেছি, এটি একটি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত নিয়োগ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই তাকে ওই পদে বসিয়েছেন। আমরা এই নিয়োগটি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।”
রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মিস ইনফরমেশন
উমামা ফাতেমা আরও বলেন, “মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর যখন গণহত্যা চালানো হয়েছিল, তখন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফেক নিউজ ও মিস ইনফরমেশন ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে রোহিঙ্গা গণহত্যাকে সহজতর করা হয়।”
তিনি বলেন, “আমরা জাতিসংঘের কাছে দাবি জানিয়েছি যে, সোশ্যাল মিডিয়ায় মিস ইনফরমেশন ও বুলিং প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এটি ভবিষ্যতে আরও বড় সামাজিক সংকট তৈরি করতে পারে।”