খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দেশে ফেরার সময়সূচি নিয়ে যুক্তরাজ্য বিএনপির মন্তব্য

খালেদা জিয়ার এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফেরার সম্ভাবনা

বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া (Khaleda Zia) আগামী এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্য বিএনপি (UK BNP)’র সভাপতি এম এ মালেক (M A Malek)। তিনি আরও জানান, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার কিছুদিন পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-ও দেশে ফিরতে পারেন।

বুধবার লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নোয়াখালী জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউকে আয়োজিত খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এক ইফতার মাহফিলে এ তথ্য জানান এম এ মালেক।

তিনি বলেন, “আমরা খালেদা জিয়াকে অনুরোধ করেছিলাম লন্ডনে ঈদ করে দেশে যেতে। তিনি আমাদের অনুরোধ রেখেছেন। এখন তিনি ঈদের পরে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন।”

এম এ মালেক আরও বলেন, “ডাক্তাররাও বিষয়টি মাথায় রেখে ম্যাডামকে সেভাবেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে পাওয়া না গেলে দু-এক দিন এদিক-সেদিক হতে পারে। তবে ম্যাডাম দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুত।”

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গ

এম এ মালেক জানান, খালেদা জিয়া দেশে ফেরার কিছুদিন পর তারেক রহমানও দেশে ফিরতে পারেন। তবে তিনি বলেন, “আমাদের লিডার (তারেক রহমান) কবে দেশে ফিরবেন, সেটি এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমি বিশ্বাস করি, একসঙ্গে দুজন অবশ্যই যাবেন না।”

উল্লেখ্য, সেনা-সমর্থিত এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একাধিক দুর্নীতির মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বরে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান তারেক রহমান। সে সময় তিনি সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেও পরে বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে দলের নেতৃত্বে সক্রিয় হন।

তার নেতৃত্বে চব্বিশের গণআন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি, যা রাজনৈতিক মহলে প্রশংসিত হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীতে সরকার গঠনে তারেক রহমানের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হবে।

মামলা থেকে খালাস ও দেশে ফেরার প্রস্তুতি

এক এগারো সরকারের সময় ও পরবর্তী আওয়ামী লীগ (Awami League) সরকারের আমলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৮৫টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে হত্যাকাণ্ড থেকে দায়মুক্তির উদ্দেশ্যে করা ঘুস লেনদেনের মামলাসহ সব মামলায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। একই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (Lutfuzzaman Babar) সহ আরও আটজন খালাস পেয়েছেন।

ফলে বিচারিক আদালতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই, যা তার দেশে ফেরার পথ সুগম করেছে।

বিএনপি নেতাদের মন্তব্য ও দলের প্রস্তুতি

২০২৪ সালের আগস্ট থেকে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে জল্পনা চলছে। তবে বিএনপি নেতারা নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা উল্লেখ করেননি। সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় (Goyeshwar Chandra Roy) বলেন, তারেক রহমান যেকোনো সময় দেশে ফিরতে পারেন। তিনি জানান, তারেক রহমান নিরাপত্তার বিষয়সহ সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মী তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের অপেক্ষায় আছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আগামীতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে তারেক রহমানের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *