তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম (Md. Mahfuz Alam) বলেছেন, বিভাজনের পথ বেয়েই আওয়ামী লীগ (Awami League) আসবে। অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যকার বিরোধ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলমের মন্তব্য
শুক্রবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে মাহফুজ আলম লিখেছেন, এস্টাবলিশমেন্ট মাস্টারমাইন্ড তৈরি করে আবার নিজেরাই সেই মাস্টারমাইন্ডের বিরুদ্ধে নেপথ্য শক্তির অনুসারীদের লেলিয়ে দিয়েছে। ছাত্রদের মধ্যকার ক্রেডিটবাজির লড়াই কে শুরু করিয়ে দিল? নেপথ্য শক্তির ন্যারেটিভের পেছনে ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টরা কী করছিল?
তিনি আরও লিখেছেন, প্রথম বিতর্ক হয়েছিল ‘সোনার বাংলা’ নিয়ে, যা থেকে কালচারাল যুদ্ধ শুরু হয়। ছাত্রদের ‘হিযবুত’ বলে ন্যারেটিভ তৈরি করে আসল হিযবুতদের সহায়তা করেছিল কারা?
র্যাডিকালাইজেশনের নেটওয়ার্ক বিস্তারের অভিযোগ
মাহফুজ আলম দাবি করেন, এস্টাবলিশমেন্টের হাতে তৈরি ‘তৌহিদী জনতা’ নামধারীদের প্রথম বৈঠক হয়েছিল এসকেএস টাওয়ারে, যা পরবর্তীতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। কারা তাদের ইন্ধন জুগিয়েছে এবং কারা তাদের বিরোধিতা করেছিল?
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের স্কুল-কলেজে র্যাডিকালাইজেশনের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে কার সহযোগিতায়? নেপথ্য শক্তির প্রোপাগান্ডা এবং মিম পেজগুলো অভ্যুত্থানের নেতাদের একের পর এক আক্রমণ করেছে।
ছাত্রদের বিভাজন এবং রাজনৈতিক প্রভাব
তথ্য উপদেষ্টা প্রশ্ন তুলেছেন, বামপন্থি ও ডানপন্থি বিভাজনের জন্য বিভিন্ন মঞ্চ ও আন্দোলনের পেছনে কারা কলকাঠি নাড়ছে? রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে ছাত্রদের নিয়ে টেনশন তৈরি করল কারা?
তিনি আরও বলেন, কেন এক্স (সাবেক) কমিশনের এক সদস্য নেপথ্য শক্তির ইন্ধনে সমঝোতা করল? নেপথ্য শক্তিকে কীভাবে প্রশাসন ও ব্যবসায়িক পর্যায়ে সমর্থন দেওয়া হলো? এতে ‘দেশপ্রেমিক’ নেপথ্য শক্তি এবং ‘জাতীয় শক্তি’র মধ্যে বিভাজন ও সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং ক্ষমতার বণ্টন
মাহফুজ আলম লিখেছেন, অলিগার্কদের টাকা কীভাবে ভাগ করা হলো? এস্টাবলিশমেন্ট, ‘বড়’ নেপথ্য শক্তি এবং ‘জাতীয়’ শক্তির মধ্যে কিভাবে ব্যবসায়িক স্বার্থ সংরক্ষণ করা হলো? ছাত্রদের একাংশকে আর্থিক লেনদেনে জড়িয়ে কীভাবে তাদের ব্ল্যাকমেইল করা হলো?
তিনি আরও বলেন, লাকি কেন হঠাৎ সামনে এল? শাহবাগ-শাপলার দ্বন্দ্ব কেন প্রকট হলো? মিডিয়াগুলোর ন্যারেটিভ কেন এত সাজানো? মুজিববাদীরা কীভাবে মিডিয়া এবং সংস্কৃতিতে পুনরায় সংগঠিত হলো?
ঐক্যের আহ্বান এবং ভবিষ্যৎ করণীয়
মাহফুজ আলম লিখেছেন, পুরাতন বন্দোবস্তের সব কলকব্জা বিকল করেই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে। নাহলে কিছুই দীর্ঘমেয়াদে টিকবে না।
তিনি বলেন, জুলাই প্রজন্মের একাংশ এস্টাবলিশমেন্টের ফাঁদে পড়েছে এবং ন্যায্য ক্ষোভকে একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে যাতে এস্টাবলিশমেন্ট অক্ষত থাকে।
তাই, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে, বিচারের প্রশ্নে, সংস্কারের প্রশ্নে ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, “জুলাই প্রজন্ম জিন্দাবাদ! ছাত্র-জনতার ঐক্য জিন্দাবাদ!”