জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের আহবায়ক খোমেনি ইহসান (Khomenee Ehsan) সম্প্রতি তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) বিষয়ক একাধিক অভ্যন্তরীণ তথ্য ও রাজনৈতিক মতামত প্রকাশ করেছেন। তিনি ২০০৭ সালের পটভূমি, তৎকালীন আন্দোলন এবং ওয়ান ইলেভেন পরবর্তী সময়কাল তুলে ধরেছেন, যেখানে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
২০০৭ সালের আন্দোলন ও ইউনূসকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
খোমেনি ইহসানের ভাষ্যমতে, তিনি ২০০৭ সালেই ড. ইউনূসকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছিলেন। সেই সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (University of Dhaka) চলমান ছাত্রআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত হন। এরপর তিনি আত্মগোপনে চলে যেতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, “জুলাই বিপ্লব” বা সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনে ড. ইউনূসের কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল না এবং বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের বিরুদ্ধে তার অবস্থান নীরব ছিল।
ড. ইউনূসকে সরকারপ্রধান করার প্রস্তাব
খোমেনি ইহসান দাবি করেন, জুলাই মাসে ছাত্রদের সামনে তিনিই প্রথম ড. ইউনূসকে সরকারপ্রধান করার প্রস্তাব দেন। তবে সেই প্রস্তাবে শুরুতে সাড়া ছিল দ্বিধান্বিত। পরবর্তীতে ড. ইউনূসের পক্ষের লোকজন নেতৃত্ব ঘোষণার জন্য বারবার তাগিদ দেন।
তাঁর মতে, “মূলতঃ ড. ইউনূস হাসিনার জুলুমের সামনে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। আমেরিকা হাসিনার সব জুলুম এন্ডোর্স করেছিল।”
ক্ষমতা, সামাজিক চুক্তি ও বাস্তবতা
খোমেনি ইহসান বলেন, “বাস্তবে ড. ইউনূসের কোনো সাংবিধানিক বৈধতা নেই। তিনি শুধুমাত্র একটি ‘সামাজিক চুক্তি’র ভিত্তিতে ক্ষমতায় আছেন। এই চুক্তি ভঙ্গ হলে তার ক্ষমতা শূন্য হয়ে যাবে এবং তাকে পদত্যাগ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাকে নেতৃত্বের আসনে বসানো হয়েছিল, যদিও অতীতে তিনিই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, বাংলাদেশে ক্ষমতার বিকার এবং পরিবর্তন বারবার হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।
অতীত থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান
পোস্টের শেষদিকে তিনি বলেন, “আমি বিনয়ের সঙ্গে সবাইকে বলব, কোনো কিছু ভাবার আগে ২০০৭ সাল থেকে গুণতে শিখুন।” তার মতে, ক্ষমতা আবর্তনশীল এবং যেকোনো সময় পাঁচ-ছয়জন মানুষও পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে।
তিনি আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আশা প্রকাশ করেন, “টোকিও থাকি আর ঢাকায় থাকি, যদি পাঁচ ছয়জন লোক নিয়েও আওয়াজ দেই তাহলেও সময় ঘুরে যাবে ইনশাআল্লাহ।”