জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারী শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের সম্মানজনক মেডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড (Madeline Albright Honorary Group Award) পাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র (United States) প্রতি বছর আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা পুরস্কার (International Women of Courage Award – IWOC) দেওয়ার পাশাপাশি এই বিশেষ সম্মাননাটিও প্রদান করে।
পুরস্কারের ঘোষণা ও প্রদান অনুষ্ঠান
শুক্রবার (২৮ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর (U.S. Department of State) তাদের ওয়েবসাইটে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেয়। আগামী ১ এপ্রিল ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও (Marco Rubio) এবং মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প (Melania Trump) বিজয়ীদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন।
নারী শিক্ষার্থীদের সাহসিকতার স্বীকৃতি
পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, বাংলাদেশ (Bangladesh)-এ দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র আন্দোলনে সাহসী একদল নারী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা সহিংসতার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও আন্দোলনে অংশ নেন এবং পুরুষ আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তারের পর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নতুন উপায় বের করেন। ইন্টারনেট বন্ধ থাকা সত্ত্বেও তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যান, যা অনন্য সাহসিকতার পরিচায়ক।
এবছর এই সম্মাননার জন্য ‘উইমেন স্টুডেন্ট প্রোটেস্ট লিডারস অব বাংলাদেশ’ মনোনীত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারী শিক্ষার্থীদের ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অফ কারেজ অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ (International Women of Courage Award 2025) লাভ করায় অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus)।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার (Abul Kalam Azad Mojumdar) এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
ড. ইউনূস বলেন, “এ স্বীকৃতি আপনাদের অসাধারণ সাহস, নেতৃত্ব এবং অটুট প্রতিশ্রুতির এক গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। আপনারা সংকটময় সময়ে সত্যিকারের সাহসের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন এবং জাতির জন্য আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “আপনাদের শক্তি, দৃঢ়তা এবং সংকল্প শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বব্যাপী বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।”
পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করলেন উমামা ফাতেমা
এদিকে, পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা (Umama Fatema)।
শনিবার (২৯ মার্চ) রাতে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে (Facebook) পোস্ট দিয়ে জানান, তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন না।
উমামা তার পোস্টে বলেন, “নারী আন্দোলনকারীদের সম্মিলিত স্বীকৃতি আমাদের জন্য সম্মানজনক। কিন্তু ফিলিস্তিন (Palestine)-এ ইসরায়েল (Israel)-এর সামরিক হামলাকে পরোক্ষভাবে সমর্থন করার কারণে আমি এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করছি।”
তিনি আরও বলেন, “ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামকে উপেক্ষা করে পুরস্কারটি ইসরায়েলের হামলাকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, যা পুরস্কারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। তাই ফিলিস্তিনের প্রতি সম্মান রেখে আমি ব্যক্তিগতভাবে এই পুরস্কার গ্রহণ করছি না।”