নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধনের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই অতিরিক্ত সময় চেয়ে প্রস্তুতির ঘাটতির কথা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নিবন্ধনের শেষ তারিখ ২০ এপ্রিল হলেও, দলটি আরও দুই মাস সময় চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানাতে যাচ্ছে।
সময় চেয়ে ভাবনা-চিন্তা
শনিবার (১২ এপ্রিল) এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন (Monira Sharmin) গণমাধ্যমে জানান, “আমরা দুই মাস পেছাতে চাচ্ছি। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে আমরা এখনো জানাইনি। আগামীকাল আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা রয়েছে। সেখানে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।”
দলের পক্ষ থেকে এই বিলম্বের কারণ হিসেবে নিবন্ধনের শর্তপূরণে অসম্পূর্ণতা এবং সংগঠনের কাঠামোগত প্রস্তুতির ঘাটতির কথা তুলে ধরা হয়েছে।
সংগঠন গঠনের দৌড়ঝাঁপ
এরইমধ্যে এনসিপি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দলের যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম (Tariqul Islam) বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, “আমরা যুব উইং ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি। এছাড়া আরও ৪-৫টি উইং গঠনের প্রস্তুতি চলছে।”
এছাড়াও দলটির একাধিক নেতা জানান, মাঠপর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো মজবুত করতে তৃণমূল স্তরে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এনসিপির দাবি, ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন থানায় তাদের সংগঠন সক্রিয় রয়েছে এবং এই নেটওয়ার্ককে নিবন্ধনের অংশ হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নিবন্ধন নিয়ে রাজনৈতিক আগ্রহ
নতুন দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতি পেতে হলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়—যেমন ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থন, নির্দিষ্ট সংখ্যক জেলা ও উপজেলায় সাংগঠনিক কাঠামো, ইত্যাদি। এসব শর্ত এখনো পুরোপুরি পূরণ না হওয়ায় এনসিপি সময় চাইছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, সময় চেয়ে আদৌ কি দলটি নির্ধারিত শর্ত পূরণে সক্ষম হবে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের সময় চাওয়া অনেক সময় কৌশলগত বিলম্ব হিসেবেও দেখা যেতে পারে, যেখানে দলীয় কাঠামো না গড়েই নির্বাচন কমিশনের স্বীকৃতির প্রত্যাশা থাকে।
যদিও এনসিপি প্রকাশ্যে আত্মবিশ্বাস দেখাচ্ছে, তারপরও দলটি শেষপর্যন্ত ইসির নির্ধারিত মানদণ্ড পূরণে কতটা প্রস্তুত তা এখনো স্পষ্ট নয়। আগামীকালের সভার পরেই হয়তো বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।