মডেল ও ‘মিস আর্থ বাংলাদেশ’ খেতাবপ্রাপ্ত মেঘনা আলম (Meghna Alam)-এর গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া যথাযথ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল (Asif Nazrul)। তার ভাষায়, “গ্রেপ্তারটি সঠিক প্রক্রিয়ায় হয়নি”—এটি সরকারিভাবেই স্বীকার করা হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে, যার তদন্ত চলছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) আইন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেখানে মেঘনা আলমকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিতর্ক ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এ নিয়ে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করেছি এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার বক্তব্যের বিষয়েও আমরা সচেতন।”
অভিযোগের ভিত্তি থাকলেও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন
আসিফ নজরুল বলেন, “মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ রয়েছে। তবে যেভাবে তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেই প্রক্রিয়াটি সঠিক হয়নি। এর মানে এই নয় যে তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ বা আলামত নেই। অভিযোগ আছে, কিন্তু সেগুলোর ভিত্তিতে উপযুক্ত আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “এ বিষয়ে এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় খতিয়ে দেখছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
সৌদি রাষ্ট্রদূত প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেল সরকার
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে, মেঘনা আলমের সঙ্গে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের সম্পর্ক নিয়ে ওঠা নানা গুজব ও সংবাদ সম্পর্কে আইন উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, তিনি বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, “এ নিয়ে আমরা কোনো আলোচনা করিনি।”
বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যের প্রয়োজন
ব্রিফিংয়ে আরও এক সাংবাদিক প্রশ্ন তোলেন—১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিলের সম্ভাবনা নিয়ে। জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, “এ বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ঐক্যমতের প্রয়োজন রয়েছে। সে আলোচনা চলছে।”
গ্রেপ্তার, রিমান্ড ও বিতর্কের সূত্রপাত
গত ৭ এপ্রিল মেঘনা আলমকে তার ঢাকার বাসা থেকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (Detective Branch)। পরবর্তীতে ১০ এপ্রিল, ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাকে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের জন্য আটকাদেশ দেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। একজন প্রতিযোগিতামূলক সৌন্দর্যবিষয়ক আসরে বিজয়ী মডেলকে এভাবে গ্রেপ্তার করা এবং পরবর্তী সরকারি অবস্থান সংশ্লিষ্ট একাধিক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।