ড. ইউনূস সহ অন্য উপদেষ্টাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানালেন রুমিন ফারহানা

বর্তমান রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান বিতর্ক এবং আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা—বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)। এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি একটি বেসরকারি গণমাধ্যমের ‘রাজনীতি’ শীর্ষক টকশোতে অংশ নিয়ে রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana) সরাসরি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন: জনপ্রিয়তা আর দক্ষতা নিয়ে যারা আত্মবিশ্বাসী, তারা কেন নির্বাচনকে এড়িয়ে চলছেন?

বিএনপির এই সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, “যারা চমৎকার প্রেজেন্টেশন দিচ্ছেন, চমৎকার বক্তৃতা করছেন, তারা যদি মনে করেন যে তাদের দক্ষতা-যোগ্যতা-জনপ্রিয়তা অনেক বেশি, তাহলে তারা নির্বাচনে আসছেন না কেন?” তার মতে, শুধুমাত্র বক্তৃতা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এইসব ব্যক্তিদের রাজনীতির মূলধারায় অংশ নেয়া উচিত।

রুমিন বিশেষভাবে ইঙ্গিত করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে, যিনি এখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আলোচনায় আছেন। তিনি বলেন, “যেই ব্যক্তি বারবার বলেছেন রাজনীতি করতে চান না, তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই—সেই ব্যক্তি যদি ঈদের দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোলাকুলি করেন এবং এরপর ‘পাঁচ বছর, তিন বছর’-এর মতো স্লোগান ওঠে, তাহলে তো একটা স্পষ্ট বার্তা যাচ্ছে। সার্জিস আলমের বক্তব্যও এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক—তিনি যখন বলেন, ‘নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন, আপনাকে যদি পাঁচ বছর পেতাম’, তখন সেটাও একটি বড় ইঙ্গিত।”

রুমিনের মতে, এসব রাজনৈতিক বার্তার ইঙ্গিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরও পরিষ্কার হয়ে উঠছে এবং সেটা দিনে দিনে বাড়ছেও।

এ প্রসঙ্গে আলোচক যখন প্রশ্ন করেন, “সরকার যদি বোঝে জনগণ কী চায় এবং সে অনুযায়ী কাজ করে, তাহলে সমস্যা কোথায়?” রুমিন স্পষ্ট করে বলেন, “কাজ যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে আপাতদৃষ্টিতে সমস্যা নেই। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী এটি একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। আপনি কাউকে ভোট ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতায় বসালে সমস্যাটা ঠিক ওখানেই।”

তিনি আরও বলেন, “আপনি চাইলে সংবিধান বদলে এমন একটি প্রভিশন আনতে পারেন—যেখানে মেধাবী ও অনির্বাচিত ব্যক্তিরা রাষ্ট্র পরিচালনায় আসবেন, যদি দেশের জনগণ তা সমর্থন করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তো জনগণ এমন কিছু চায়নি।”

রুমিনের বক্তব্যে স্পষ্ট একটি বার্তা ছিল: গণতন্ত্রে নেতৃত্বের বৈধতা আসে নির্বাচনের মাধ্যমে। আর যদি কেউ সত্যিই জনপ্রিয় ও সক্ষম হন, তাহলে তাকে নির্বাচন থেকে দূরে থাকা নয়, বরং ভোটের ময়দানে নামার সাহস দেখানো উচিত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *