গাইবান্ধায় জামায়াতের দাওয়াতি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, আহত দুই ভাই

গাইবান্ধার সদর উপজেলার সাহাপাড়া ইউনিয়নের নান্দিনা গ্রামে ইসলামি দাওয়াতি কর্মসূচি চলাকালে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন জামায়াতের দুই কর্মী—শিপন মণ্ডল ও স্বপন মণ্ডল। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলায় গুরুতর আহত এই দুই ভাই বর্তমানে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

হামলার অভিযোগ সরাসরি আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে

আহত জামায়াত নেতা শিপন মণ্ডল দাবি করেন, স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বেই এই হামলা চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই স্বপন মণ্ডলের কানে ছয়টি সেলাই লেগেছে, আমাকেও নির্মমভাবে মারধর করা হয়েছে।’ হামলার ব্যাপারে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা মো. আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং তিনি বাড়িতেও ছিলেন না।

জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, দলীয় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সন্ধ্যায় নান্দিনা গ্রামে ইসলামিক দাওয়াতি কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন তারা। এ সময় কিছু আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কর্মসূচিতে বাধা দেন। কর্মসূচি অব্যাহত রাখলে হঠাৎ করেই জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় লাঠিসোটা ব্যবহার করা হয় এবং ঘটনাস্থলে মুহূর্তেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

জামায়াতের ক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি

এ ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার বিকেলে সাহাপাড়া ইউনিয়নের জামায়াত নেতাকর্মীরা নান্দিনা গ্রামে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন। গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি রোকনুজ্জামান রোকন এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক দল। কারো ওপর চাপ প্রয়োগ না করে মানুষকে ইসলামের পথে ডাকি। অথচ আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠনে পরিণত হয়েছে, যারা গুপ্ত হামলা ও হত্যার পাঁয়তারা করছে।’

পুলিশ বলছে, অভিযান চলছে

গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “ঘটনার পরপরই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে। মামলা নেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে।” তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনার পর নান্দিনা গ্রামে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত, আর রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন—যেখানে ধর্মীয় দাওয়াতের কর্মসূচিও এখন সহিংসতার শিকার হয়, সেখানে গণতন্ত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা সুরক্ষিত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *