সরকারের প্রস্তাবিত রাজনৈতিক সংস্কারকে ‘অবাস্তব’ আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনায় মুখর হয়েছেন জিএম কাদের (GM Quader)। তিনি বলেন, দেশের অর্ধেক মানুষকে উপেক্ষা করে কোনো সংস্কারই সফল হবে না। বরং এমন উদ্যোগ দেশে স্থিতিশীলতার পরিবর্তে অস্থিরতা বাড়াবে।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে বর্ধিত সভার দ্বিতীয় দিনে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “সরকার একটা দল বানিয়ে রেখেছে, এখন তারাই সংস্কার করছে—এরা যেন এলিয়েন, অন্য গ্রহ থেকে আসা।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যাদের নির্বাচন থেকে বাদ দেবেন, তারা ঘরে বসে আঙুল চুষবে? দেশে স্থিতিশীলতা আসবে কীভাবে?” তাঁর মতে, একটি গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন না হলে দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে।
সরকারকে উদ্দেশ করে জিএম কাদের বলেন, “আপনারা যেভাবে নিজেদের সুবিধামতো নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন, তা কি শেখ হাসিনার নির্বাচনের চেয়ে ভালো হবে? তিনি তো শেষমেশ সব কিছু নিয়েই থাকতে পারেননি—আপনারাই বা কতদিন পারবেন?”
নির্বাচনের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার মতে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন ছাড়া দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বিনিয়োগ আসবে না, কর্মসংস্থান হবে না—বরং বেকারত্ব বেড়ে যাবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও উন্নত হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমান আর্থসামাজিক চিত্র তুলে ধরে জিএম কাদের বলেন, “কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কৃষকরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, অথচ আলুর দাম কম দেখে অনেকে খুশি। তারা বুঝছেন না, কৃষকের চোখের কান্না কাকে বলে।” তিনি রেমিট্যান্স-নির্ভর অর্থনীতিকে স্থায়ী সমাধান নয় বলেও মন্তব্য করেন।
তিনি স্পষ্ট করে দেন, দেশের চলমান সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ সবার অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। অন্যথায়, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক দুরবস্থা আরও প্রকট হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন জাতীয় পার্টির (Jatiya Party) এই শীর্ষ নেতা।