ফরিদপুরে রাতের আঁধারে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় অভিযান চালিয়ে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পেছনে ছিল এক ব্যানার—যেখানে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রসঙ্গ তুলে মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চন্ডিপুর (Chandipur) এলাকার ব্র্যাক নার্সারির সামনে তারা অভিযান চালায়। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান। সোমবার (২১ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আটজন হলেন—চন্ডিপুরের মৃত জীবন সাধুর ছেলে বিমল কুমার সরকার (৪৫), দয়ারামপুরের মৃত আসাদউজ্জামানের ছেলে মো. বাবু মোল্লা (১৯), সালথার দাউদ শেখের ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (১৯), গুড়দিয়ার নয়া মাতুব্বরের ছেলে রবিউল ইসলাম (২০), সোলায়মানের ছেলে হাসিবুল (১৯), ঝন্টুর ছেলে আকাশ (২১), খলিসাডুবির ফারুক মাতুব্বরের ছেলে ফাহিম মাতুব্বর (১৯) এবং মধুখালীর গন্ধখালী গ্রামের মাকুল হোসেনের ছেলে সোয়াদ হোসেন (১৯)।
অভিযানের সময় পুলিশ একটি ব্যানার জব্দ করে, যেখানে লেখা ছিল:
‘অবৈধ দখলকারী স্বৈরাচার ইউনূস সরকারের আইসিটি আদালতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান কার্যক্রম প্রত্যাখ্যান করে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল। আয়োজনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ফরিদপুর জেলা শাখা।’
পুলিশ জানায়, এ ব্যানারের ভিত্তিতে ধারণা করা হয় যে, ওই মিছিল ছিল রাজনৈতিক প্রতিবাদের অংশ। ওসি আসাদউজ্জামান বলেন, “আমরা খবর পেয়েছিলাম যে, আওয়ামী লীগের পক্ষে রাত দেড়টার দিকে চন্ডিপুর ব্র্যাক নার্সারি এলাকায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। সে অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে আটজনকে ঘটনাস্থল থেকেই আটক করি।”
তিনি আরও জানান, ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তারদের সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর ফরিদপুরের রাজনৈতিক অঙ্গনে সৃষ্টি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। যদিও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি, তবে পুলিশি অভিযান এবং রাতের মিছিলে অংশগ্রহণের দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া বিষয়টি রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়াতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।