আ’লীগ নেতার মা’-দ’-ক ব্যবসা রক্ষা করায় বৈষম্যবিরোধী নেতা সুজনকে গন’-ধো’-লাই

যশোর শহরের ঘোপসেন্ট্রাল রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এসকে সুজনকে স্থানীয় জনতা গণধোলাই দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব বিস্তার করে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া একদল বিতর্কিত যুবকের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছিলেন।

ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সুজনসহ মোটরসাইকেলে চড়ে ৮-১০ জন যুবক ঘোপসেন্ট্রাল রোডে আসে এবং স্থানীয়দের ভয় দেখিয়ে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এসময় স্থানীয়দের একাংশের সঙ্গে তাদের বচসা বাঁধে। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা এসকে সুজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়, বাকিরা পালিয়ে যায়।

এই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (Anindya Islam Amit)। তিনি সেন্ট্রাল রোড দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এবং হট্টগোল দেখে গাড়ি থেকে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি সুজনকে জনতার রোষ থেকে উদ্ধার করে তীব্র ভর্ৎসনা করেন এবং পুলিশকে খবর দেন।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কোতোয়ালি মডেল থানার একটি টিম। পুলিশ জানায়, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মধ্যস্থতায় ঘটনাটি মীমাংসা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘোপসেন্ট্রাল রোডের জীবন, অন্তর, বিজয়সহ আরও কয়েকজন যুবক দীর্ঘদিন ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার (Shaheen Chakladar)-এর ছত্রচ্ছায়ায় থেকে এলাকায় মাদক কারবার চালিয়ে আসছিল। এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করার সাহস কেউ পেত না। গত ৫ আগস্টের পর তারা আত্মগোপনে গেলেও সম্প্রতি আবার এলাকায় ফিরে এসে পুনরায় মাদকের ব্যবসা শুরু করে। স্থানীয়রা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন এবং গতকাল বিকেলে এলাকায় তাদের দেখে সরাসরি সতর্ক করেন।

এই প্রেক্ষাপটেই রাতের হট্টগোল এবং গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে এলাকাবাসীর বক্তব্য।

রাশেদ খান (Rashed Khan), যশোর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেন, “সুজন আমাদের সদস্য। শুনেছি একটি ছোটখাটো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, তবে তা মীমাংসা হয়ে গেছে।”

কোতোয়ালি থানার ইন্সপেক্টর (ওসি তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন (Kazi Babul Hossain) জানান, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয় এবং সমাধান হয়।”

ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। তবে পুলিশ ও স্থানীয় নেতৃত্বের আশ্বাসে পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *